দেলোয়ার হোসেন স্টাফ রিপোর্টার:
বগুড়ায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জোড়া হত্যা মামলার আসামি পলায়নের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। ঘটনার মাত্র দুই দিনের মাথায় কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেনকে হঠাৎ বদলি করে পুলিশ হাসপাতালে সংযুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ বদলির নির্দেশনা জারি করা হয়। অভ্যন্তরীণ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মোসাদ্দেক হোসেনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে অবহেলা, নারী কেলেঙ্কারি, মামলার আসামিদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ এবং আর্থিক অনিয়মের মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি সংবেদনশীল দায়িত্বে বহাল ছিলেন। অনেকেই মনে করছেন, সাম্প্রতিক পলায়ন ঘটনার পর বদলির এ সিদ্ধান্ত মূলত ‘দায় এড়ানোর কৌশল’। এ ঘটনার পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) আতোয়ার হোসেন জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বর থেকে জোড়া হত্যা মামলার আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ছয়জন পুলিশ সদস্যকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কোর্ট ইন্সপেক্টরকে কেন পুলিশ হাসপাতালে সংযুক্ত করা হয়েছে, তা তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর স্পষ্ট হবে।নিয়মিত আদালতে যাতায়াতকারী আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, কোর্ট ইন্সপেক্টরের শিথিল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণেই আসামি পালানোর সুযোগ পেয়েছে। তারা বলেন, কেবল বদলি নয়, মোসাদ্দেক হোসেনের পূর্বের কর্মকাণ্ডসহ গোটা বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি।ঘটনার পর সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আইনজীবী সমাজেও ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের মতে, প্রশাসনিক গাফিলতি ও দুর্বলতার দায় কেবল বদলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এমন ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। সবাই এখন অপেক্ষা করছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের দিকে। দেখা যাক, কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেনের ভূমিকা উন্মোচিত হয় কিনা, নাকি সত্য আবারও অন্ধকারেই চাপা পড়ে যায়।