দেবীগঞ্জে ওলামা দলের সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা – আজাদ
লক্ষ্মন রায়
বিশেষ প্রতিনিধি, পঞ্চগড়।
২০শে সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ বিজয় চত্বরে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে এক বিশাল সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ ফরহাদ হোসেন আজাদ।বক্তব্যের এক পযায়ে তিনি বলেছেন, “নীল নদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতে ইসলামী মানে ইসলাম নয়।” তিনি অভিযোগ করেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ধরে ইসলামের নাম ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে। অথচ ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম—যেখানে সহিংসতা, বিভাজন ও চরমপন্থার কোনো স্থান নেই
ওলামা দলের সমাবেশে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় সহস্রাধিক আলেম-ওলামা অংশ নেন, যা বিজয় চত্বর এলাকা এক প্রকার মহাসমাবেশে পরিনত হয়।
বিএনপি নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, “মসজিদ আল্লাহর ঘর। সেখানে নামাজ পড়া হবে, দীনের শিক্ষা দেওয়া হবে, কোরআন-হাদিসের আলোচনা হবে। কিন্তু মসজিদে রাজনৈতিক সভা-মিটিং কেন হবে? ইসলামের শিক্ষা ও আল্লাহর ঘরকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলেম সমাজের অপরিসীম অবদান রয়েছে। সমাজ থেকে কুসংস্কার, উগ্রবাদ ও সহিংসতা দূর করতে হলে আলেম-ওলামাদের একত্রিত হয়ে ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইসলামী শিক্ষা থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। এর ফলে নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক অশান্তি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাচ্ছে। আলেম সমাজ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামী শিক্ষা প্রচার করেন, তাহলে সমাজ থেকে এ ধরনের অনিয়ম দূর হবে এবং শান্তি-সম্প্রীতির পরিবেশ প্রতিষ্ঠা পাবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দেবীগঞ্জ উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাওলানা আজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা শাহাদাত হোসেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গনি বসুনিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মোঃ তবারক হ্যাপি এবং উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা সমাজে ক্রমবর্ধমান অপরাধ, মাদকাসক্তি ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান। তারা বলেন, ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে, তরুণ প্রজন্মকে ধর্মীয় মূল্যবোধে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারী আলেম-ওলামারা অঙ্গীকার করেন, তারা সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ জাগ্রত করতে কাজ করবেন, ধর্মের নামে কোনো বিভ্রান্তি বা সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেবেন না। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার ও সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন।