সুপণ বিশ্বাস-(বিশেষ প্রতিনিধি)
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ – এ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদানের দাবিতে আজ ১২ আগস্ট সকালে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম অঞ্চল শাখার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সরোয়ার খান মনজু’র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক হাসান মুকুল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান, সহ সভাপতি কাজী আবু বকর চৌধুরী, মোহাম্মদ শামসুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ অলি উল্লাহ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তাহের, শিশু ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জানাতুল ফেরদৌস রক্সি প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলেন আজ এই মুহূর্তে আমাদের থাকার কথা ক্লাশরুমে। তার বদলে আমরা আছি সংবাদ সম্মেলনে। কেন এখানে আসতে বাধ্য হলাম।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারিকৃত পরিপত্রের মাধ্যমে জানতে পারি যে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী অবদান রাখা কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পরিপত্রটি বৈষম্যমূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা এবং ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
আরো বলেন বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদান নয়-এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, সামাজিক স্বীকৃতি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে কিন্তু সে নিতে পারছে না শুধুমাত্র তার বিদ্যালয়ের স্বীকৃতির ধরণ ভিন্ন বলে, তখন তা তার মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব গড়ে তোলে, যা জাতীয় শিক্ষানীতির সাম্যের নীতির পরিপন্থী। বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের উপর যে মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হয় তার সকল দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা মানে কেবল স্বাক্ষরতা নয়। ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে দেওয়া। সেই ভিত গড়ার প্রথম ধাপেই যদি বৈষম্য শুরু হয়, তাহলে আমরা কিভাবে সমতার সমাজ গড়বো?
শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকার। কোন শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার। বিধায় বর্তমান সরকারের সময়ে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার সেই বৈষম্যের শিকার হোক এটা অপ্রত্যাশিত।
বিগত ১৭ জুলাই তারিখের পরিপত্রটি বাতিল করে ২০২৫ এ অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা সহ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গৃহীত অন্যান্য যে কোনো কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষায় অংশীজন হিসেবে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমঅধিকার যেন অক্ষুন্ন থাকে তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দানের জোর দাবি জানাচ্ছি।
আগামী ২০ আগস্ট তারিখের মধ্যে আমাদের দাবি সমূহ বাস্তবায়িত না হলে আমরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও, পরবর্তীতে বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও, মার্চ ফর ঢাকা সহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।