1. news@www.provatibangladesh.com : বাংলাদেশ : দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
  2. info@www.provatibangladesh.com : দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ :
বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
কক্সবাজার ব্লাড ডোনারর্স সোসাইটির ১০ বর্ষে পদার্পণ বাঁশখালীর কৃতি সন্তান কিংবদন্তি হাফেজ মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব ই,ন্তে,কা,ল সাংবাদিক নাদিম হত্যা: চেয়ারম্যান পদ ফিরে পেলেন প্রধান আসামি ডিমলায় মিনি পেট্রোল পাম্পে আ,গু,ন চকরিয়ায় পুত্রবধূকে দুই সন্তানসহ বের করে দিয়ে ছেলের বাল্যবিয়ে: এলাকায় চাঞ্চল্য মা,দ,ক চোরাচালান ও পাচার প্রতিরোধে মেহেরপুরে বিজিবির জনসচেতনতামূলক সভা মেহেরপুর আদালতে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীসহ ০৬জনের হাজিরা, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ সবাইকে সাংবাদিক নাদিম হ,ত্যা: চেয়ারম্যান পদ ফিরে পেলেন প্রধান আ,সা,মি কুতুবদিয়ায় বিএনপি’র সদস্য নবায়ন সদস্য ফরম শুভ উদ্বোধন। চকরিয়ায় বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে সঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মায় ভাঙন, উৎকণ্ঠায় নদী তীরের বাসিন্দারা

দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৩ বার পড়া হয়েছে

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মায় ভাঙন, উৎকণ্ঠায় নদী তীরের বাসিন্দারা

আরাফাত ভূঁইয়া শান্ত
জেলা,প্রতিনিধি,মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে ভাঙন চলছে। এতে ভাঙনে রয়েছেন পদ্মা তীরের মানুষ। চলমান বৈরী আবহাওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি, প্রচণ্ড বাতাস আর প্রবল স্রোতের কারণে লৌহজং উপজেলার পদ্মাপাড়ের কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। বিশেষ করে উপজেলার সিংহেরহাটি ও বড় নওপাড়া এলাকায় পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ফেলে রাখা বালুভর্তি জিও ব্যাগ সরে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় মাটি সরে গিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রবল স্রোত ও উঁচু উঁচু ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙনের মাত্রা বেড়েছে । এতে পদ্মাপাড়ের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিংহেরহাটি গ্রামের দেলোয়ার দেওয়ান ভাইবোন নিয়ে পানিতে নেমে বাঁশ, কচুরিপানা, খড়কুটো দিয়ে নদীর ভাঙন থেকে বাড়িঘর রক্ষার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, সকালে তার মৃত বাবা জয়নাল দেওয়ানের দাফন দিয়েছেন। শোকের মধ্যেই নদীভাঙন থেকে বাড়ি রক্ষায় নেমেছেন। বড়নওপাড়া গ্রামের পুতুল আক্তার জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই পদ্মার ভাঙনে জিও ব্যাগ সরে যাচ্ছে। এর ফলে মাটি সরে গিয়ে অনেক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সিংহেরহাটি গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল বলেন, আমার বাড়িটি কনকসার-নাহেরহাট খালের উৎসমুখ পদ্মা পাড়ে। আমার বাড়ির পূর্বপাড় থেকে ব্লক ফেলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু আমার বাড়ি থেকে পশ্চিমে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বাইরে রয়েছে।যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে ওখানে বসবাস করা আমার পক্ষে সম্ভব হবেনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ্মানদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে পদ্মা সেতুর ভাটিতে বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৪৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া থেকে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দীঘিরপাড় পর্যন্ত পদ্মা নদীর ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ কিলোমিটার তীর এলাকায় চলছে স্থায়ী ও সতর্কতামূলক বাঁধ নির্মাণের কাজ। এর মধ্যে স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ ৯ দশমিক ১০০ কিলোমিটার এবং সতর্কতামূলক প্রতিরক্ষা কাজ (ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ রাখা স্থান) ৪ দশমিক ৬২০ কিলোমিটার।

২০২১ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে। তখন ৯ দশমিক ১ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। অর্থ বরাদ্দ ছিল ৪৪৬ কোটি টাকা। পরে বাঁধ নির্মাণের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে করা হয় ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ কিলোমিটার। আর ৪৪৬ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয় ৪৭০ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে পুনরায় বরাদ্দ বাড়িয়ে ৫২৭ কোটি টাকা করা হয়। সেই সাথে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর।

বর্ষা মৌসুমের আগে বাঁধ নির্মাণের কাজ ধীরগতিতে শঙ্কিত ছিলো পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা। আড়াই দশকে দুই উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রাম বিলীন হয়েছে। ভিটেমাটি, জমিজমা হারিয়েছেন অর্ধ লক্ষ পরিবার। গাওদিয়া গ্রামের কাজী বাবুল বলেন, পদ্মার ভাঙনে দুই দশক আগে বসতবাড়ি, জমিজমা হারিয়ে বর্তমানের স্থানে আছি। এখান থেকে নদী মাত্র ২০০ মিটার দূরে। বাঁধের কাজ দ্রুত শেষ হলে শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম। মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৪৮ শতাংশ। ২৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক জানান, প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১৬ দশমিক ৮৭০ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রতিরক্ষা কাজ ৯ দশমিক ১০০ কিলোমিটার এবং সতর্কতামূলক প্রতিরক্ষা কাজ (ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ রাখা স্থান) ৪ দশমিক ৬২০ কিলোমিটার। এছাড়া ১ দশমিক ৩০০ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী বাঁধ বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু প্রকল্প বহির্ভূত এলাকা রয়েছে ১ দশমিক ৮৫০ কিলোমিটার।

কনকসার খালের মুখে পদ্মাতীরের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা বলেন, আমার বাড়ি থেকে পশ্চিমে ৫০০ মিটার এলাকা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের বাইরে, তাই শঙ্কায় আছি। গত বছর ঢেউয়ের আঘাতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হলে নিশ্চিন্ত হতাম।

এ বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, স্থায়ী বাঁধে কিংবা সতর্কতামূলক স্থানে ভাঙন দেখা দিলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে স্পিডবোর্ডযোগে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোঃ নেছার উদ্দিন শনিবার ভাঙন কবলিত তেউটিয়া, কনকসার, কুমার ভোগ, বেজগাঁও ও গাঁওদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। পরিদর্শনকালে তাঁর সঙ্গে ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কর্মকর্তারাও।

ইউএনও মোঃ নেছার উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, নদীতে পানির প্রবল চাপ, বাতাস ও ঢেউয়ের কারণে পূর্বে ফেলা জিও ব্যাগগুলো অনেকাংশেই সরে গিয়ে নতুন ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু পরিবার এখনো ঝুঁকিতে থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়নি। তিনি আরও বলেন, পদ্মার ভয়াল থাবা থেকে জনপদ রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। স্থানীয়দেরও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট