মোঃ কামাল উদ্দিন স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর এলাকার একটি বহুতল ভবনে এনটিএমসি এবং বিটিআরসি সহ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে রাষ্ট্রের কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বিপুল পরিমান অবৈধ ভিওআইপি (VOIP) সরঞ্জামাদিসহ একজন অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী’কে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বর্তমান সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ইত্যাদি ওটিটির মতো উন্নত প্রযুক্তি এখন দেশে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হলেও কমেনি ভিওআইপির মাধ্যমে সাধারণ ফোনে কল আদান-প্রদান। ফলে বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্খিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার রিপোর্টে দেশে বর্তমানে বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল আসছে প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় দুই কোটি মিনিট। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ লাখ মিনিট কল আসছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডাব্লিউ) দিয়ে, আর বাকিটা আসছে বেসরকারি আইজিডাব্লিউ অপারেটর ফোরাম (আইওএফ)-এর মাধ্যমে। অন্যদিকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন কোটি মিনিট কল এখনো ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের মাধ্যমেই আসছে।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের একটি বাসায় জনৈক ব্যবসায়ী অবৈধভাবে ভিওআইপি সরঞ্জমাদি হেফাজতে রেখেছে ব্যবসা করে আসছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ০১ জুলাই ২০২৫ইং তারিখে আনুমানিক ২২০০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি চৌকস আভিযানিক দল এনটিএমসির কর্তৃক কারিগরী সহায়তা এবং বিটিআরসির কর্মকর্তাগণসহ বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মিজান খাঁন (৩১), পিতা-জামশেদ খাঁন, সাং-আমানউল্লাহ আকবর হাট, থানা-সন্দীপ, জেলা-চট্টগ্রামকে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞসাবাদে তার দেখানো ও শনাক্ত মতে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত ১। ১২৮ পোর্ট এর কালো রংয়ের সিম বক্স ০৯টি, ২। ২৫৬ পোর্ট এর কালো রংয়ের সিম বক্স ২৩টি, ৩। ৫১২ পোর্ট এর কালো রংয়ের সিম বক্স ০১টি, ৪। ১৬ পোর্ট এর কালো রংয়ের সিম বক্স ০১টি, ৫। ০৮ পোর্ট এর কালো রংয়ের সিম বক্স ০১টি, ৬। Dell flat panel monitor U2422H (silver) ০১টি, ৭। Keyboard,(A4 Tech) Model KRS 82 ০১টি, ৮। CPU MCBB311LKGNNS001204500106 Made in china (Brocken glass) ১টি, ৯। TP link এর রাউটার ০৫টি, ১০। 10 port USB hub ০৪টি, ১১। TP link TL- SG116 Gigabite switch ০১টি, ১২। Mikrotik router board ০৪টি, ১৩। TP Link desktop switch ০১টি, ১৪। Huwei এর switch ০১টি, ১৫। TP Link desktop switch 16 port ০১টি, ১৬। Cisco spor এর desktop switch ০১টি, ১৭। Huwei switch Wifi router ০১টি, ১৮। Teletalk এর modem ০৯টি, ১৯। Power cable ১৩টি, ২০। রাউটারের সুইচের সার্জার ১০টি, ২১। রবি সিম ২১০০টি, ২২। গ্রামীণ সিম ১৩টি, ২৩। টেলিটক সিম ১৯,১৮৩টি, ২৪। বাংলালিংক সিম ০৪টি উদ্ধার করা হয়। অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জমাদি উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় এনটিএমসি কর্তৃক কারিগরী সহায়তা এবং প্রদান করা হয়। উদ্ধারকৃত অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদির আনুমানিক মূল্য ৫০ লক্ষ টাকা।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরো জানা যায় যে, সে দীর্ঘদিন যাবৎ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক লাইসেন্স ব্যতীত অবৈধভাবে ভিওআইপি সরঞ্জামাদি স্থাপ করতঃ অবৈধভাবে টেলিযোগাযোগ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। অবৈধভাবে সফটওয়্যার ভিত্তিক সুইচ এর মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে আর্ন্তজাতিক কল রাউট করতঃ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদির মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানে রাজস ফাঁকি দিয়ে যান্ত্রিক, ভার্চুয়াল এবং সফটওয়্যার ভিত্তিক কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে ভিওআইপি ব্যবসা করে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।