এম,এ,মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার (নওগাঁ) প্রতিনিধি,দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের জীবনধারার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু পরিবেশের উপর মানুষের অতি নির্ভরতা, অপরিকল্পিত ব্যবহার ও অবজ্ঞার ফলে আজ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল মরুকরণ ও খরার মতো ভয়ংকর দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। এই বৈশ্বিক সংকট সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৭ই জুন বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়।
১৯৯৫ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে এই দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—মাটি ক্ষয়, খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা। ১৯৯৪ সালে “জাতিসংঘ মরুকরণবিরোধী কনভেনশন” (UNCCD) গৃহীত হয়, যার মাধ্যমে মরুকরণ রোধে বৈশ্বিক পদক্ষেপ শুরু হয়।মরুকরণ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে উর্বর জমি ধীরে ধীরে অনুর্বর হয়ে যায় এবং অবশেষে মরুভূমিতে রূপ নেয়। এটি সাধারণত জলবায়ু পরিবর্তন, বনভূমি নিধন, অতিরিক্ত চাষাবাদ ও গবাদিপশুর চাপের কারণে ঘটে।খরা হলো দীর্ঘ সময়ব্যাপী বৃষ্টিপাতের ঘাটতি, যার ফলে কৃষি, জলাশয় এবং পরিবেশে সংকট দেখা দেয়। বিশ্বের প্রায় ২৫০ কোটির বেশি মানুষ মরুকরণ ও খরার ঝুঁকিতে রয়েছে। আফ্রিকা ও এশিয়ার অনেক দেশেই খাদ্য ঘাটতি, পানির সঙ্কট ও অভিবাসনের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে এই দুটি সমস্যা। বাংলাদেশেও খরা-প্রবণ অঞ্চল যেমন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও দিনাজপুর অঞ্চলে চাষাবাদে মারাত্মক প্রভাব পড়ে।
প্রতিরোধে যা যা ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে- বৃক্ষরোপণ ও বন সংরক্ষণ,সঠিক ভূমি ব্যবহার,বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ,পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা,জনসচেতনতা বৃদ্ধি,সরকারি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উদ্যোগ
মরুকরণ ও খরা শুধুই একটি পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বের প্রশ্ন। তাই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র—সবাইকে একসাথে এই সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে। “বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস” আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একটি সুস্থ, সবুজ ও টেকসই পৃথিবীর জন্য আমাদের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।