এস এ খান শিল্টু, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
১৪/০৬/২৫ মেহেরপুরে তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাস্তা কিংবা মাঠে কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করেই কাজ করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে। এতে করে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা। এ সময় রোদে না বের হওয়া, ছায়াযুক্ত স্থানে চলাফেরা করা, তরল খাবার খাওয়া এবং শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু নিয়ে লাইনে দাঁড়ানো ধানখোলা গ্রামের জোসনা খাতুন জানান, তার ১৪ মাস বয়সী শিশু রায়ান দুই দিন যাবৎ জ্বর-সর্দিতে ভুগছে। গত রাতে শুরু হয় পাতলা পায়খানা। আউটডোরে টিকিট কেটে চিকিৎসক দেখালে ভর্তি করে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
ধর্মচাকী গ্রামের সুমাইয়া এসেছেন তার শিশু কন্যা হুজাইফাকে নিয়ে। তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বমি করতে থাকে, পরে শুরু হয় পাতলা পায়খানা। চিকিৎসক ভর্তি লিখেছেন। এমন অর্ধশতাধিক শিশু শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে।
শুধু শিশুই নয়, বেশ কয়েকজন বৃদ্ধকেও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত মেহেরপুরে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ফলে বেড়েছে রোদের তীব্রতা ও ভ্যাপসা গরম। চরম বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কৃষকদের খুব সকালে মাঠের কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। আর রাস্তায় উপার্জনক্ষম মানুষদের আয় কমে গেছে। ভ্যান ও অটোচালকরা রাস্তায় ঘুরলেও যাত্রী পাচ্ছেন না বলে জানান।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ যাবৎ মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেড়েছে। শনিবার বেলা ১২টায় ৩৫ ডিগ্রি এবং বিকেল ৩টায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫২ থেকে ৬৩ শতাংশ। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র শিশু কনসালট্যান্ট ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে সব বয়সের মানুষ জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। সেক্ষেত্রে শিশুদের বেশি করে তরল খাবার, মায়ের দুধ, শাকসবজি খাওয়াতে হবে এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। এছাড়াও অপ্রয়োজনে রোদে না বের হওয়া ও বেশি পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।