সাজেদুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার(পত্নীতলা নওগাঁ)
পবিত্র ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নওগাঁর পত্নীতলার পশুরহাট গুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। উপজেলার বিভিন্ন হাটে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে দেশীয় খামারে ও গৃহস্থবাড়িতে লালিত গরু।
এ বছর ভারতীয় গরুর আমদানি কম। তবে হাটে গরু-ছাগলের সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতার উপস্থিতি তুলনামূলক কম। আর এতে পশুর ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।
উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী উপজেলার আজ সোমবার নজিপুর নতুনহাট সাপ্তাহিক পশুর হাট বসেছে। শেষ মুহূর্তে কেনা বেচাও চলছে, এই গরমে হাটে ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়ে তিল পরিমাণ জায়গা পরিমান নেই। এখন গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই হাটগুলো সাধারণত সাপ্তাহিক ভিত্তিতে হয়ে থাকে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জানা গেছে, উপজেলার নতুনহাট, মধুইল, বাজার শিবপুর,মাতাজীহাট এসব হাটে ইতোমধ্যেই কোরবানির কেনাবেচা পুরোদমে শুরু হয়েছে।
নজিপুর নতুন হাট ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাপক সংখ্যক গরু উঠলেও ক্রেতা কম থাকায় বিক্রি অনেকটা থমকে আছে। বিক্রেতারা বলছেন, পশুর আমদানি পুরোপুরি শুরু হয়েছে, দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি। তবে ক্রেতারা বলছেন, খামারিদের কাছ থেকে গরু কিনবেন তারা। ঈদের তো আরও বেশ কিছুদিন বাকি। তাই হাট ঘুরে দাম দেখছি। এ ছাড়া বেচা কেনাও তেমন একটা নেই। আর খামারিরাও গরু ছাড়ছেন না।
উপজেলার মহেশপুর গ্রামের খামারি আয়নাল হক বলেন, “একটা গরু মোটাতাজা অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এখন খাবারের দামও অনেক বেশি। কিন্তু দাম ঠিকমত পাচ্ছি না। গত বছর একটা উন্নত জাতের ষাঁড় দুই লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এবার তিনটি ষাঁড় প্রস্তুত করেও ভালো দাম পাচ্ছি না।”
হাট সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, এবারের কোরবানির বাজারে দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুর আমদানি নেই। এছাড়া গত কয়েক বছরে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা এবছর বড় পরিসরে খামার করেননি। ফলে স্থানীয় গৃহস্থদের পালন করা গরুই এবার হাটে ভরসা হয়ে উঠেছে।
জেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার কোরবানির পশুর চাহিদা ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৭৭৭টি হলেও প্রস্তুত রয়েছে ২ লক্ষ৬২ হাজার ৬৩১টি পশু। এতে দেখা যাচ্ছে, জেলার চাহিদার তুলনায় প্রায় ৯০ হাজার ৮৫৪টি পশু বেশি রয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে পশু জেলার বাইরে সরবরাহ করা যেতে পারে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অন্য বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে পশু কিনে নিয়ে যেতেন। এবার সেই উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ফলে সরবরাহ থাকলেও চাহিদা নেই; যার কারণে দামও পাওয়া যাচ্ছে না।
হাট ইজারাদাররা বলছেন, পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হাটে এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরু-মহিষের আমদানি নেই। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু এখন তেমন আসছে না। তাই এবারের কোরবানিতে দেশীয় গরুর কদর বেশি থাকবে।
এবারের কোরবানির ঈদে বিভিন্ন এলাকার খামার ও গৃহস্থদের বাড়ির গরুই তাদের হাটে প্রধান্য পাচ্ছে। দেশীয় গরুর সরবরাহ ও চাহিদা উভয়ই ভালো থাকায় এবারের ঈদে দেশীয় গরুই প্রধান বাজার দখল করবে। এ ছাড়া হাটে সঠিক নিয়মে টোল আদায় হচ্ছে। তবে আগের মত “সীমান্তে টহল বাড়ানো হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই যেন ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু কিংবা সেজন্য বিজিবি তৎপর রয়েছে।