সম্প্রতি হতে যাওয়া, উত্তরা প্রেস ক্লাবে আওয়ামীলীগ দোসরদের অভিষেকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হতে যাচ্ছে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। এ নিয়ে উত্তরার স্থানীয় জনমনে ব্যাপকভাবে সমালোচনার ঝড় বইছে।
আগামীকাল শনিবার (১৭ই মে) দুপুর ৩ টায় উত্তরা প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের দোসর উক্ত ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদের সভাপতিত্বে উক্ত অভিষেকে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সম্মানিত আহ্বায়ক জনাব আমিনুল হক।
অভিষেকটিতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব হাজী মোস্তফা জামান। আওয়ামী লীগের দোষরদের আয়োজিত অভিষেকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন -ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান সেগুন।
উপস্থিত থাকবেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র যুগ্ম -আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন,
আরো উপস্থিত থাকবেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম -আহ্বায়ক এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, তাছাড়া উপস্থিত থাকছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম -আহ্বায়ক আফাজ উদ্দিন।
শুধু তাই নয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগের সদস্য আশরাফুল হক।
জানা যায়, এ সকল শীর্ষ নেতাদের শুভেচ্ছা জানাবেন আওয়ামী লীগের আরেক দোসর উক্ত ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বদরুল।
স্থানীয়রা জানান, যে বদরুল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের এমপি হাবিব হাসানের সহযোগী হিসেবে দাপিয়ে বেড়াতো সেই বদরুলের আয়োজিত অভিষেকে যদি এমন শীর্ষ নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকেন সেটা দলের জন্য বড়ই লজ্জাজনক এবং দুঃখজনক।
এতে বিএনপি’র উপর আস্থা হারাতে যাচ্ছে সাধারণ জনগণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, আওয়ামী লীগ সমর্থক জনগণ ও সমালোচনার সাথে বলেন,
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিগত ১৭ বছর সব সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন এই বদরুল। এমনকি আমরা একসাথে বিভিন্ন মিটিং -মিছিলএবং সমাবেশে ও একসাথে যোগদান করেছি।শুধু তাই নয়, আমাদের সাথে তার রয়েছে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও ছবি।
তারই প্রমাণ স্বরূপ একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাবেক এমপি হাবিব হাসানের পাশে দাঁড়িয়ে ১৫ই আগস্টে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে আওয়ামী দোসর বদরুল জনগণের উদ্দেশ্যে বলছে-
‘বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করে। বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশ হতে পারে না। ১৫ ই আগস্টে গঠিত সমাবেশে বদরুলকে আরো বলতে শোনা যায়, বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই আমরা পেয়েছি এই বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে মানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে অবশ্যই মানতে হবে।
এ সময় বদরুল জনগণের অধিকার নিয়ে বলেন -আপনি বাংলাদেশে রাজনীতি কিংবা আপনার অধিকার গঠনে বঙ্গবন্ধু বিহীন কিছুই করতে পারবেন না।’
কিন্তু আমাদের এই দুঃসময়ে দিন বদলের সাথে সাথে এই প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি তাদের রূপ বদলে নিয়েছে।তারা ছিল একটি দালাল চক্র। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এতদিন সুযোগ সুবিধা নিয়েছে। দলের নামে ব্যবসা করতে এসেছিলে ব্যবসা শেষ তাই এখন চলে গেছে। এরা সব সময় সুযোগ সন্ধানী। তাই এমনটি করতে পেরেছে। এটা খুবই লজ্জার!
এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর উত্তরায় বসবাসরত বিএনপির কিছু কর্মীরা বলেন,
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে রক্ষা হওয়া দেশে আমরা এই সুযোগ সন্ধানী প্রেতআত্মাদের অপতৎপরতার মাধ্যমে আওয়ামীলীগকে আর প্রতিষ্ঠিত হতে দিতে চাই না। আমরা উত্তরার সাধারণ জনগণ এর তীব্র নিন্দা জানাই। এবং যারা এমন কাজ করবে আমরা তাদেরই বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ব্যাপক ব্যবস্থা নিব।
শোনা যায়, এই অভিষেকে যোগদানে অংশগ্রহণের নামে চারদিকের বিভিন্ন মহল থেকেও চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে।
উল্লেখ্য যে উত্তরা সাংবাদিক মহলেও রয়েছে বদরুলকে নিয়ে নানা অভিযোগ।