এম,এ,মান্নান, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
বিশ্বমানবতার ইতিহাসে ফিলিস্তিন এক গৌরবময় ভূখণ্ড হিসেবে পরিচিত ছিল।ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক কারণে এই ভূমি ছিল নানা জাতিগোষ্ঠীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।কিন্তু বিগত কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিন এক ক্রমাগত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।নিরীহ জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা আজ চরম দুর্ভোগের শিকার। আজকের দিনে ফিলিস্তিন যেন একটি ধ্বংসস্তুপের দেশ—ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে, মানুষ হারিয়েছে আপনজন, হারিয়েছে স্বাভাবিক জীবনধারা।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের ইতিহাস প্রায় এক শতাব্দী পুরোনো।১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই অঞ্চলে সংঘাত শুরু হয়।ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করা হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে তারা নিজের মাতৃভূমিতে পরবাসীর মতো জীবন যাপন করছে।এই সংঘাত কেবল রাজনৈতিক নয়, এতে ধর্ম, ভূ-রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক স্বার্থও জড়িত।সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় সংঘটিত হামলাগুলো ফিলিস্তিনের পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়েছে।জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থা এই মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও,কার্যকর সমাধান আজও অধরা।ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে মানুষের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ এবং মানবতা।
ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত যেসব ঘটনা ঘটছে, তা এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নামান্তর।বোমাবর্ষণ, খাদ্য ও ওষুধের সংকট, অবরোধ, বিদ্যুৎ ও পানির অভাব—এসবই জনজীবনকে চরম দুর্বিষহ করে তুলেছে।শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, স্বাস্থ্যসেবা নেই, নিরাপত্তা নেই। এই পরিস্থিতি বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো।
বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর উচিত নিরপেক্ষভাবে এই সংকটের সমাধানে এগিয়ে আসা। কেবল নিন্দা বা বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ না থেকে কার্যকর কূটনৈতিক ও মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।ফিলিস্তিনের জনগণও শান্তি ও স্বাধীনতার অধিকার রাখে।ফিলিস্তিন এখন একটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে—এটি শুধু একটি অঞ্চলের দুর্ভাগ্য নয়, এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য লজ্জার বিষয়।যুদ্ধ কখনোই কোনো সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। শান্তি,সহানুভূতি ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও নিরাপদ ফিলিস্তিন গঠনের পথেই রয়েছে এই সংকটের প্রকৃত সমাধান।