মো:মোমিনুল ইসলাম (মোমিন) জেলা প্রতিনিধি
বগুড়ার সান্তাহার পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক সান্তাহার জংশন স্টেশন আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই প্রথম শ্রেণির, কেপিআইভুক্ত স্টেশনটির সুখ্যাতি একসময় ছিল সর্বত্র। বর্তমানে এটি ব্রডগ্রেজ, মিটারগ্রেজ এবং ডুয়েল গ্রেজ ট্রেন চলাচলের আওতায় থাকলেও অব্যবস্থাপনা আর অবহেলার কারণে স্টেশনটির সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
সান্তাহার স্টেশনের ছয়টি প্লাটফর্মের মধ্যে ৫ ও ৬ নম্বর প্লাটফর্ম দিয়ে মিটারগ্রেজ ট্রেন চলাচল করে। অথচ এ দুটি প্লাটফর্মে কোনো যাত্রী ছাউনি নেই। ফলে গরমে, বৃষ্টিতে কিংবা রাতে ট্রেন ধরতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বিশাল প্লাটফর্ম হলেও পর্যাপ্ত ছাউনি বা বসার ব্যবস্থা না থাকায় বিশেষ করে নারী, শিশু এবং বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন।
রহিম শেখ নামের এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে ডাকঘর নিউজকে বলেন-“এই প্লাটফর্মে দ্রুত যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা উচিত। অসুস্থ এবং বয়স্ক মানুষদের জন্য এই অবস্থা খুব কষ্টকর।”
শামিমা পারভিন নামের আরেক যাত্রী ডাকঘর নিউজকে জানান-“এখানে বসার কোনো জায়গা নেই, ফ্যান নেই। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে রোদে দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। স্টেশনে ব্রেস্টফিডিং সেন্টারও নেই, অথচ এটি থাকা বাধ্যতামূলক।”
৫ ও ৬ নম্বর প্লাটফর্ম সংলগ্ন বাজার সড়কটি এখনো কাঁচা। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়া পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক আলোর অভাবে রাতে চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
যাত্রীরা জানান, প্লাটফর্ম সংলগ্ন সড়কটি দ্রুত পাকা করা এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। স্টেশনে পানির সংকটও তীব্র। তিনটি বিশ্রামাগার থাকলেও বেয়ারা বা আয়া না থাকায় সেগুলো প্রায়ই বন্ধ থাকে। ফলে যাত্রীরা স্যানিটেশন সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়া স্টেশন এলাকায় গরু-ছাগলের অবাধ বিচরণ এবং মলমূত্রের দুর্গন্ধও পরিবেশ দূষণ করছে, যা প্রথম শ্রেণির এই স্টেশনের মর্যাদার সাথে বেমানান।
সান্তাহার জংশন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার খাদিজা খানম ডাকঘর নিউজকে বলেন-“জনবল সংকটের কারণে আমরা শতভাগ সেবা দিতে পারছি না। মিটারগ্রেজ প্লাটফর্মের ছাউনিসহ পানির সংকটের বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সমস্যাগুলোর তালিকা নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই সমাধান হবে।”