নবীনগর সরকারি কলেজ শিক্ষক সংকট ও হোস্টেলের ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে কলেজ প্রশাসন
সামজাদ জসি
ক্রাইম রিপোর্টার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী নবীনগর সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৯ সালে এবং ১৯৮৫ সালে এটি সরকারিকরণ করা হয়। ২০১২ সালে এই কলেজে স্নাতক (অনার্স) কোর্স চালু হয়। বর্তমানে কলেজটিতে বাংলা, ইংরেজি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা—এই আটটি বিষয়ে অনার্স চালু আছে। উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক মিলিয়ে কলেজটিতে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ২ হাজার ৮৩৮ জন। তবে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ৩৬ জন থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছেন মাত্র ২২ জন। চার বছর ধরে শিক্ষক সংকটের কারণে পরীক্ষার ফলাফল ভয়াবহভাবে নিচের দিকে নেমে গেছে।
অন্যদিকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ছাত্রীদের জন্য নেই কোনো মহিলা হোস্টেল। এতে করে অনেক ছাত্রী লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছেন। এছাড়া অনার্স পরীক্ষা দিতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে যেতে হয়। দূরপাল্লার এ যাত্রায় শিক্ষার্থীরা নানান বিড়ম্বনায় পড়েন। তাই তারা মহিলা হোস্টেল নির্মাণ, শিক্ষক সংকট নিরসন ও অনার্স পরীক্ষা নবীনগর কলেজেই বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন।
ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, এ কলেজটি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে প্রতিটি বিভাগেই নিয়মিত ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য সহায়তা দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সায়েদুল ইসলাম খান জানান, অনেক বিভাগে একজন করে শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালানো হচ্ছে। এত মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি হয় এখানে, অথচ শিক্ষক স্বল্পতার কারণে তাদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না।
কলেজের লাইব্রেরিয়ান জাকির হোসেন বলেন, এ কলেজ থেকে ভালো ভালো শিক্ষক বদলি হয়ে যাওয়ায় সংকট তৈরি হচ্ছে। এর দ্রুত সমাধান চাই।
কলেজের অধ্যক্ষ একে এম রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে লেখাপড়ার মান কমে যাচ্ছে। শিক্ষকরা একাধিক ক্লাস নিতে গিয়ে হাপিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া মহিলা হোস্টেল না থাকায় ছাত্রীরাও পড়ছেন সমস্যায়। আশা করি কর্তৃপক্ষ কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত এসব সমস্যা সমাধান করবেন।