এমদাদুল হক ভূইয়া নান্দাইল
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় প্রায় ৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দাসপাড়া সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের ৪ মাসের মধ্যেই দেবে গেছে। এতে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, এমনকি সেতুটিও রয়েছে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায়। ফলে আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের মানুষকে এখনও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নান্দাইল-তাড়াইল পাকা সড়কের দরিল্লা গ্রাম থেকে রাজগাতী ইউনিয়নের দাসপাড়া হয়ে আমলীতলা-কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। মাঝপথে সুখাইজুড়ি নদীর ওপর দুই বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের দাসপাড়া সেতুটি নির্মাণ করে। তবে সেতুর সংযোগ সড়ক কাঁচা রয়ে যাওয়ায় এখনো পর্যন্ত সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।
মঙ্গলবার ২৩/০৯/২৫ ইং সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশে নির্মিত প্রায় ২০০ মিটার সংযোগ সড়কের (ইটের সলিং) বড় অংশই বৃষ্টির পানিতে দেবে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত, জমেছে হাঁটু পানি।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আলীম উদ্দিন বলেন, “এত টাকার কাজের পরও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে সড়ক ভেঙে পড়েছে। সর্বত্র ফাটল আর দেবে যাওয়া স্পষ্ট। দরিল্লা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা উসমান গনি মাস্টার (৭০) জানান, “আগে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষায় নৌকা দিয়েই পার হতাম। সেতু হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় সেটিও এখন কোনো কাজে আসছে না।”
স্থানীয় তোতা মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বড় সেতু হইছে বালা কথা, কিন্তু বর্ষাকালে কোনো উপকার পাইতাছি না।” ইজিবাইক চালক রাজু মিয়ার দাবি, সেতুর আগে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণ করা উচিত ছিল।অভিযোগের বিষয়ে সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আব্দুল গনি বলেন, “দেবে যাওয়া অংশ মেরামত করে দেওয়া হবে। বৃষ্টি গেলে আর ভাঙবে না।”
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, “কার্তিক মাসে আরও বৃষ্টি হবে। পরে একবারেই মেরামত করা হবে। কাজের মান নিয়ে অভিযোগ সঠিক নয়। এদিকে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বিশ্বাস বলেন, “সংযোগ সড়ক পাকাকরণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দেবে যাওয়া বিষয়টি জানা নেই, তবে খোঁজ নেওয়া হবে।স্থানীয়দের অভিযোগ, সময়মতো সড়ক পাকাকরণ না হলে কোটি টাকার এই সেতু দীর্ঘদিন মানুষের কোনো কাজে আসবে না।