লতিফুল নয়ন ফারাজী(কুড়িগ্রাম)উলিপুর প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার রামদাস ধনিরাম খেয়ারপাড় গ্রামে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। গুনাইগাছ ইউনিয়নের সাবেক মহিলা সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সাহেরা বেগম (৭০) নামের এক বৃদ্ধার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি মৃত নুরুজ্জামানের স্ত্রী।
রোববার সকালে স্থানীয় স্বজনদের খবর পেয়ে উলিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের বড় ছেলে শাখাওয়াত হোসেন বাবলু জানান, তার মা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। পাঁচ বছর আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাবলুর ভাষায়, আজ ভোর রাতে তিনি রান্নাঘরের বটি দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেছেন।
ছোট ছেলে শাহিন আলম বলেন, তার স্ত্রী প্রথমে শাশুড়িকে বিছানায় না দেখে খুঁজতে বের হন। পরে রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় মাকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করেন। পরিবারের সদস্যরা ছুটে গিয়ে বৃদ্ধাকে মৃত অবস্থায় পান।
শাহিনের স্ত্রী বিউটি বেগম বলেন,আমি শাশুড়ির সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমাতাম। মাঝে মধ্যে তিনি রাতে ঘুম না হলে বাড়ির আঙিনায় হাঁটাহাঁটি করতেন। আজ ভোরে হঠাৎ তাকে খুঁজে পাইনি। পরে রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। পাশে ব্যবহৃত বটি পড়ে ছিল।
পাড়া-প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানান, সাহেরা বেগমের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। পরিবারের ছেলেরা তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করলেও তিনি দীর্ঘদিন ভোগান্তিতে ছিলেন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা মনে হলেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সাহেরা বেগম সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় একজন নারী ছিলেন। গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মহিলা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি এক সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয়রা তাকে সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে একজন নিবেদিতপ্রাণ মানুষ হিসেবে স্মরণ করছেন।