হিমালয় কন্যা আগাম কুয়াশায় আচ্ছাদিত
লক্ষ্মণ রায়, বিশেষ প্রতিনিধি, পঞ্চগড়
দেশের সর্বউত্তরের জেলা হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ে শরতের মাঝামাঝি সময়েই ঘন কুয়াশার আগমন দেখা দিয়েছে। শীতকাল শুরু হতে এখনও বেশ দেরি থাকলেও কুয়াশার ছোঁয়া যেন আগাম শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা লক্ষ্য করা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরেই ভোরে হালকা কুয়াশা পড়ছিল। তবে শনিবার সকালে হঠাৎ ঘন কুয়াশা পঞ্চগড়কে আচ্ছাদিত করে নেয়। এতে সকাল থেকে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। হঠাৎ কুয়াশার কারণে স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা টিউশনি করতে যেতে সমস্যা হয়েছে, কর্মজীবী মানুষ কাজে যেতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন এবং যানবাহন চলাচলেও মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।
সোনাহার এলাকার কৃষক আসলাম (৫৫) বলেন, “আইজ ঠান্ডা লাগিছে। কুযাশায় দূরে কিছু দেখা যায় না। সময়টা শীতকাল না হলেও ভারী কুয়াশা পড়ছে। আগাম শীত চলে আসলে ধানসহ সবজি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে।”
সোনাহার সৃজনশীল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক তপন রায় জানান, “প্রতিদিন সকাল ৬টায় আমাদের কোচিং ক্লাস শুরু হয়। আজকের কুয়াশা অন্যদিনের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সময়মতো আসতে পারেনি। তাই আজ ক্লাস শুরু করতে হয়েছে সকাল ৭টায়।”
পঞ্চগড় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে। শনিবার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ভোর ও রাতে কুয়াশার প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। তবে অক্টোবর মাসের শেষ দিক থেকে শীতের প্রকোপ স্পষ্টভাবে অনুভূত হবে।
পঞ্চগড় আবহাওয়া অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, “হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে এ জেলায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় আগে শীত নামে। শরতের মাঝামাঝি সময়ে এমন কুয়াশা পড়া স্বাভাবিক বিষয় হলেও এটি আগাম শীতের ইঙ্গিত বহন করছে।”
তবে শীতকাল মানেই পিঠাপুলি আর খেজুরের রস খাওয়ার উৎসব। এছাড়া এ সময় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভারতের কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্যও উপভোগ করা যায়। সব মিলিয়ে আগাম কুয়াশা যেন আনন্দের বার্তাই বয়ে আনে।
---
বার্তা প্রেরক—
লক্ষ্মণ রায়
বিশেষ প্রতিনিধি