রোয়াংছড়িতে ইজিবাইক চালক হত্যা: রহস্য উদ্ঘাটন, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
ক্রাইম রিপোর্টার
মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের নাথিং ঝিরি এলাকায় ইজিবাইক (টমটম) চালক অমন্ত সেন তঞ্চঙ্গ্যা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান আসামি রাজন্ত তঞ্চঙ্গ্যাকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (২০সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কনফারেন্স হলে পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে অমন্ত সেন তঞ্চঙ্গ্যার হত্যাকান্ডের আসামী রাজন্ত তঞ্চঙ্গ্যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেপতারকৃত রাজন্ত তঞ্চঙ্গ্যা দানিয়েল ত্রিপুরার ছেলে, আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের নাটিং ঝিড়ি এলাকার মৃত চন্দ্র কুমার তঞ্চঙ্গ্যার পালিত ছেলে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় গত ১৪সেপ্টেম্বর প্রতিদিনের মতো সেদিন তিনি রাত পর্যন্ত ইজিবাইক চালিয়ে বাসায় ফেরেননি। পরদিন সকাল পর্যন্তও বাসায় না ফেরায় তার পরিবার রোয়াংছড়ি থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে স্থানীয়রা তার ব্যবহৃত কাপড়ের ব্যাগ, মোবাইল ফোন এবং রক্তমাখা দুইটি বাঁশের কঞ্চি ও একটি ভাঙা গাছের টুকরা ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়।
১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বান্দরবান সদর উপজেলার কাশেমনগর এলাকায় সাঙ্গু নদীতে ভাসমান অবস্থায় অমন্ত সেন তঞ্চঙ্গ্যার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে টাকা লেনদেনের বিরোধের জেরে অমন্ত সেন তঞ্চঙ্গ্যাকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত রাজন্ত তঞ্চঙ্গ্যা স্বীকার করেছে যে, সে ভুক্তভোগীকে মুনাফাসহ ৩৫ হাজার টাকা ধার দিয়েছিল। টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে বাঁশঝাড়ের নিচে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির সময় রাজন্ত তঞ্চঙ্গ্যা বাঁশ ও গাছের টুকরা দিয়ে অমন্ত সেনের মাথায় আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তার লাশ টেনে নিয়ে পার্শ্ববর্তী তারাছা খালে ফেলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় রোয়াংছড়ি থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানায়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবদুল করিম জানান, “হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ ও আসামির সম্পৃক্ততা আমরা উদ্ঘাটন করতে পেরেছি। আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।”
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দ্রুত তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে।” এ ঘটনায় রোয়াংছড়ি থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে এবং আসামীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।