রাইহান ইসলাম সজিব,স্টাফ রিপোর্টার
আজ সকাল ১০:২০ ঘটিকায় সরকারি বিএম কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে এবং কলেজ শাখার সভাপতি মোঃ শাহেদ খানের নেতৃত্বে অধ্যক্ষ বরাবর ১৩ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপি প্রদান শেষে অদ্য ১০:৪৫-১১:০৫ ঘটিকা পর্যন্ত কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে উক্ত ১৩ দফা দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কলেজ ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ১৩ দফা দাবিসমূহঃ
ক) জুলাই চেতনা সমুন্নত রেখে ক্যাম্পাসে বিদ্যমান স্বৈরাচারী বন্দোবস্তু ও ফ্যাসিবাদী কাঠামো সম্পূর্ণ মূলোৎপাটন করতে হবে এবং ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে দৃষ্টিনন্দন “জুলাই চত্বর” নির্মাণ করতে হবে।
খ) ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অতি দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ ভবন সংস্কার করতে হবে এবং এর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পরিমার্জন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
গ) শিক্ষার্থীদের উপর চাপানো অযাচিত ফি মওকুফ করতে হবে এবং ফি-সংক্রান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।
ঘ) পরিসংখ্যান বিভাগে বিদ্যমান অনার্স কোর্সকে মাস্টার্স পর্যায়ে উন্নিত করতে হবে। পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার চাহিদা পূরণে নতুন বিষয় যেমন পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টসহ আরও কয়েকটি প্রাসঙ্গিক আধুনিক বিষয় সংযুক্ত করতে হবে।
ঙ) নারী শিক্ষার্থীদের আবাসিক সংকট দূর করার জন্য একটি নতুন অত্যাধুনিক আবাসিক হল নির্মাণ করতে হবে।পাশাপাশি কলেজ প্রাঙ্গণে মানসম্মত কমনরুম, স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন এবং ক্যান্টিনে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কর্নার নিশ্চিত করতে হবে।নারী শিক্ষার্থীদের নামাজের স্থানকে বর্ধিত এবং পরিমার্জিত করতে হবে।
চ) সনাতন ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে কবি জীবনানন্দ দাস হলের জরাজীর্ণ অবস্থাকে সম্পূর্ণ সংস্কার করতে হবে এবং একটি নতুন অত্যাধুনিক আবাসিক ভবন নির্মাণ করতে হবে।
ছ) ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি ও সার্বিক সংস্কার করতে হবে, পাশাপাশি আবাসিক হলসমূহের মসজিদগুলোর প্রশস্ততা বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে ইসলামী মূল্যবোধ চর্চা ও প্রসারের লক্ষ্যে একটি আধুনিক ইসলামিক কালচারাল ও রিসার্স সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জ) শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকসহ সকল প্রকার অবকাঠামোগত ও জনবল সংকট দ্রুত সমাধান করতে হবে। একই সঙ্গে, বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আধুনিক ও সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে হবে। ব্যবসা অনুষদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য একটি কার্যকর বিজনেস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি অত্যাধুনিক আইটি সেন্টার নির্মাণ করতে হবে।
ঝ) ক্যাম্পাসের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এবং খেলার মাঠ সারাবছর ব্যবহার উপযোগী করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের নান্দনিকতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার্থীদের বিশ্রামের সুযোগ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন চত্বরে দৃষ্টিনন্দন বৃক্ষরোপণ, পুকুরে জলজ ফুলচাষ, পুকুরের চারপাশে ওয়াকওয়ে ও বসার স্থান নির্মাণ করতে হবে।
ঞ) শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে বিদ্যমান হলগুলো সংস্কার করতে হবে এবং নতুন হল নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন সময়ে আগত বহিঃপরীক্ষকদের জন্য গেস্ট হাউজ নির্মাণ করতে হবে।
ট) কলেজে কর্মরত বিভিন্ন স্তরের অস্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে স্থায়ী করতে হবে এবং তাদের জন্য পর্যাপ্ত বেতন-ভাতা ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
ঠ) প্রত্যেকটি রুটে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের আলাদা বাস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাসপুলে কমপক্ষে আরও ৫টি স্থায়ী বাস যোগ করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য অডিটোরিয়াম সংবলিত আধুনিক টিএসসি (টিচার্স-স্টুডেন্টস সেন্টার), পর্যাপ্ত আসনসংবলিত অত্যাধুনিক লাইব্রেরি, সার্বক্ষণিক চিকিৎসকসহ চিকিৎসাকেন্দ্র, এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ড) মাদকমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকল্পে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং পুরো ক্যাম্পাসকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে।