রইজ উদ্দিন গোলাম রসুল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের অন্তর্গত চান্দুরা ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকিও দিয়েছেন।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল এবং সড়ক অবরোধ করা হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এতে করে মহাসড়কের দুদিকে যানবাহন আটকা পড়েছে। তীব্র যানজটের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে পথচারীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দূরপাল্লার বাস-ট্রাক ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। দুপুর ১টার দিকে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুপাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে বিপাকে পড়েন হাজারো যাত্রী ও চালক।
ঢাকা থেকে সিলেটগামী যাত্রী মোছা. মিম আক্তার বলেন, আমি প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চান্দুরা এলাকায় আটকে আছি। প্রচণ্ড ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কখন এই যানজট ছাড়বে তা অনিশ্চিত।
বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আন্দোলন করা যেকোনো নাগরিকের অধিকার, তবে সেটা সড়ক অবরোধ না করে ভিন্নভাবে করা উচিত।
বিজয়নগরের বুধন্তি ও চান্দুরা ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে আসন সীমানা পুনর্বিন্যাসের চূড়ান্ত গ্যাজেট প্রকাশ সম্পর্কে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. খায়রুল সরকার বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্তে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একটি চক্র বিজয়নগর নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই আপত্তি সত্ত্বেও দুটি ইউনিয়নকে আলাদা করা হয়েছে। বিজয়নগর উপজেলাকে অখণ্ড রাখতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ে নামার কথা জানান তিনি। প্রয়োজনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
উপজেলার বিএনপি নেতা মো. রাষ্টু সরকার বলেন, আমরা সদর আসনে ছিলাম এবং সেখানেই থাকতে চাই। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বিজয়নগরে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল। এবার আবার দুটি ইউনিয়ন সরাইল আসনের সঙ্গে যুক্ত করায় মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে নেমেছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আন্দোলনের মুখে অচল যান চলাচল। দূরপাল্লার যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু আন্দোলনকারীরা আলটিমেটাম দিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বে না তারা।