বদিয়ার মুন্সী স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শপথ পাঠের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত আবিদ-হামিম-মায়েদ পরিষদ। ০৭ই সেপ্টেম্বর (রবিবার) দুপুর ১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় এই কর্মসূচি।
প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান শপথবাক্য পাঠ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শপথ পাঠে প্রার্থীরা ঢাবি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ৮ দফা প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
প্রথমেই তারা ঘোষণা দেন, অতীতের গণরুম প্রথা, গেস্টরুম নির্যাতন, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর যে রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, তা আর কখনো ক্যাম্পাসে ফিরতে দেওয়া হবে না।
দ্বিতীয় প্রতিজ্ঞায় উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণআন্দোলনে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ও দেশভাগের সময় ছাত্রসমাজের অবদানকে ধারণ করে তারা ভবিষ্যতেও গণতন্ত্র, স্বাধীনতা বা জনগণের মুক্তি হুমকির মুখে পড়লে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন।
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে তৃতীয় প্রতিজ্ঞায় বলা হয়, ঢাবি ক্যাম্পাসকে নারীবান্ধব, সুরক্ষিত ও সমঅধিকারভিত্তিক এলাকায় পরিণত করা হবে। নিরাপদ আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও ক্ষমতায়নের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
চতুর্থ প্রতিজ্ঞায় বলা হয়, বৈধ সিট নিশ্চিত করতে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি, সাশ্রয়ীমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, সহজ যাতায়াতব্যবস্থা ও পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করবেন তারা।
পঞ্চম প্রতিজ্ঞায় প্রার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীদের অনলাইনে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সাইবার বুলিং, ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তি ও অনলাইনভিত্তিক সব ধরনের অপতৎপরতা প্রতিহত করা হবে।
ষষ্ঠ প্রতিজ্ঞায় তারা শিক্ষা, গবেষণা, খেলাধুলা, সংস্কৃতি এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার অঙ্গীকার করেন।
সপ্তম প্রতিজ্ঞায় প্যানেল ঘোষণা দেয়, ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তারা শিষ্টাচার, সৌজন্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখবেন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আচরণে অনুকরণীয় ভূমিকা রাখবেন।
শেষ প্রতিজ্ঞায় বলা হয়, প্যানেলের প্রতিটি প্রার্থী এই অঙ্গীকার অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন এবং স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করবেন।
শপথ পাঠ শেষে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, ‘প্রতিশ্রুতি নয়, পরিবর্তনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’ স্লোগানে নিজেদের প্যানেলকে বিজয়ী করতে। তারা একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও শিক্ষার্থীবান্ধব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।