মামলা করে আতংকিত নও মুসলিম,বাবার কন্যা শ্রীমঙ্গল এক শিশু সন্তানের জননী!
আবদাল মিয়া, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি,
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৬ নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের মোহাজেরাবাদ এলাকাধীন পূর্ব দক্ষিণ পাড়ায় সরকারি জমিতে বসবাসকারী চা শ্রমিক থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ কারী নওমুসলীম,দিনমজুর রমজান মিয়ার বড় মেয়ে মৌলভীবাজার বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করে বর্তমানে ২০ বছর বয়সী মরিয়ম বেগম ৩ বছর বয়সী এক কন্যা শিশুকে নিয়ে প্রভাবশালী স্বামী আমিনুল ইসলাম বাবু ও তার পিতা হাসিম মিয়া এবং তাদের স্বজনদের একটি চক্রের সহায়তায় ক্রমাগত হুমকি ধামকি ও মিথ্যা অপপ্রচারে অতিষ্ঠ জীবন
ও নিজের ইজ্জত এবং শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগকারী রমজান মিয়া ও তার বিশ বছর বয়সী কন্যা (৩ বছর বয়সী শিশু সন্তানের মা) স্বামী সংসার থেকে বিনা বিচারে বিতাড়িত এবং একটি সিন্ডিকেটের অপবাদের শিকার নির্যাতিত ও নিগৃহীত মরিয়ম বেগম (২০) ।
একসময় মরিয়মের বাবা রমজান মিয়া চা শ্রমিক ছিলেন, তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী থেকে পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মহাজিরাবাদের পূর্ব দক্ষিণপাড়ায় সরকারি (খাস) অল্প জমিতে বসবাস করে আসছেন। তিনি জানান, তিনি একজন অর্থবৃত্ত ও স্বজন হীন দিনমজুর।কেবলমাত্র স্থানীয় মুসলিমদের প্রতি ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে লেবু বাগান শ্রমিক হিসেবে দিন মজুরিতে কাজ করে পরিবারের ৬-৭ জনের ভরণপোষণ চালিয়ে যাচ্ছে।
নওমুসলিম হিসেবে অনেকেই ভালোবেসেছিল এবং এখনো ভালোবেসে যাচ্ছে কিন্তু এখন যাদেরকে ভাই ভেবেছিলাম সেই ভাইদের মধ্য থেকে কয়েকজন লোক অজানা স্বার্থহাসিলের আশায় ২ছেলে ও ৩ মেয়ে নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকার অধিকারটুকু কেড়ে নিতে চাচ্ছে এবং স্বামীর বাড়ি থেকে ফেরত আসা মেয়েটি ও তার সন্তানের ভরণপোষণ সহ সকলের জীবন যাপনের ব্যাপারে আর এক নতুন বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন বলে ধারণা করছেন রমজান মিয়া।
নওমুসলিম দিনমজুর রমজান মিয়া বলেন,
আমার নিরীহ পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে তুলতে কিছু প্রভাবশালীদের যোগসাজসে বিভিন্ন মিডিয়াকর্মীদের ভুল তথ্য দিয়ে, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা ও বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচারের ফলে আমার মেয়েটি পালিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
রমজান মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের সহায়তায় বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সাংবাদিকদের একটি টিম কয়েকদিন রমজান মিয়া ও হাসিম মিয়া ও আমিনুল ইসলাম বাবুর (রমজান মিয়ার মেয়ের শশুর ও স্বামী) সম্পর্কিত সৃষ্ট ঘটনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রথমে তার মেয়েকে (মরিয়ম) পাওয়া যায়নি এবং রমজান মিয়া, হাসিম মিয়া ও তার ছেলে আমিনুল ইসলাম বাবুকে না পেয়ে
ফিরে আসার সময় একটি চায়ের দোকানে রমজান মিয়ার সাথে সাক্ষাত হয়।
এ সময় স্থানীয় বাজারে বেশ কয়েকজন মুরুব্বির সাথেও সরেজমিন কথা হয় আমাদের ।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করলে রমজান মিয়া সকলের সামনে কথা বলার সাথে সাথে এক পর্যায়ে কাঁদতে থাকেন এবং বলেন, আমার লোকবল ও অর্থসম্পদ কিছুই নেই, আত্মীয়-স্বজনও নেই, আমি চা শ্রমিক থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এই এলাকায় সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে, নতুন মুসলিম হিসেবে সবাই আমাকে ভালোবাসতো, আমার মেয়ে যখন উপযুক্ত হলো তখন থেকেই যেন আমাকে ভালোবাসার বদলে আঘাত দেয়া শুরু করলো কিছু ধর্মীয় ভাই, আমার ৩ মেয়ে,২ ছেলে। বড় মেয়েটি পাশের বাড়ির প্রভাবশালী হাসিম মিয়ার ছেলের (আমিনুল ইসলাম বাবু) নজরে পড়ার পর কলাকৌশল করে ফুঁসলিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় মেয়েটিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তখন মেয়েটির বয়স ১৪/১৫, আমার অর্থবিত্ত শক্তি সামর্থ্য না থাকায় এবং স্থানীয় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিপত্তির অভাবে কোন আইনি ব্যবস্থার দ্বারস্থ হতে পারিনি,থানা পুলিশ সম্পর্কে আমার জানাশোনা না থাকায় সামাজিকভাবে চাপে পড়ে ২ লক্ষ টাকা দেনমোহরের ঘোষণা দিয়ে কাবিন ধার্য করে বিয়ে দেওয়া হয়, তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কারণে যথাসময়ে কাবিন করা সম্ভব হয়নি।পাঁচ বছর অসহায় হয়ে পঞ্চাশবারের ও অধিক মেয়েটা কে কাবিন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি, কারণ মেয়ের সাথে শশুর শাশুড়িরা বলেছে ১২ বছর পরে হলেও তাকে বিদায় করে দিবে এই ভয়ে।
অপরদিকে পাঁচ বছরের মধ্যে কখনো আমার মেয়ের জামাই আমার বাড়িতে দাওয়াত খেতে আসেনি। দাওয়াত দিলে তার পরিবারের লোকজন তাকে আসতে দেই না। কারণ আমি চা শ্রমিক ছিলাম অথচ তার বাড়ি এবং আমার বাড়ি পাশাপাশি। তারপরও এখন পর্যন্ত কাবিন তো দিচ্ছেই না বরং নানা সময়ে যৌতুক দিয়ে মেয়েটিকে স্বামীর ঘর করাইবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম। আমার তো আরো দুটি মেয়ে বিয়ের বাকি রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আর তা হলো না। সর্বশেষ বিদেশ যাওয়ার জন্য এক লক্ষ টাকা নেওয়ার জন্য আমার মেয়েকে আমার কাছে পাঠালে আমি আমার মেয়েকে বলি আমার পক্ষে কি এত টাকা দেওয়া সম্ভব? তোমার বাচ্চা হওয়ার সময়ে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে আজ পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করতে পারি নাই। আরো ৪০ হাজার টাকা তোমার স্বামীকে দিলাম। কাবিনের জন্য পাঁচ বছরে কমপক্ষে ৫০ বার চেষ্টা করছি তারা পাত্তাই দেয় না, ছেলের মা বলে এখন বাচ্চাই নাকি কাবিন!
নিরীহ রমজান মিয়ার বিভিন্ন অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়,১ লাখ টাকা না দেওয়াই তার এক সন্তানের জননী মরিয়মকে কলঙ্কিত করার পরিকল্পিতভাবে নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার শশুর হাসিম মিয়া তার ছেলে আমিনুল ইসলাম বাবু ও তাদের সহযোগী একটি চক্র।
পাহাড়ি এলাকা বাড়িঘর খুব পাতলা এখানে একজন অন্যজনের বাড়িতে যাওয়া আসা করে। আর যাদের আত্মীয়-স্বজন আছে তাদের তো যাওয়া আসা থাকা খাওয়া হবেই। এর প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমার মেয়ের স্বামী আমিনুল ইসলাম বাবুর আপন খালাতো ভাই নাজমুল মিয়া (২১) পিতা মতলিব মিয়া ছোট থেকে তার খালার ঘরে বসবাস করে আসছে পাশাপাশি বাড়ি হওয়াতে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় তারা একে অপরের ঘরে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে এবং কখনো কখনো রাত্রিও যাপন করে।
গত কোরবানির সময় এমন এক অভিযোগ তুলে পাশের বাড়ির আপন খালাতো ভাই নাজমুলের সাথে অবৈধ সম্পর্কের কথা বলে আমার মেয়েটিকে স্বীকার করার জন্য নানাভাবে নির্যাতন করে। এর প্রকৃত রহস্য আমাদের জানা ছিল না।এর কিছুদিন পর মেয়েটি আমার বাড়িতে বেড়াতে দেয় এবং এক লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। এরই মধ্যে পরকীয়ার নামে আমার মেয়ের উপর অপবাদ তুলে। কিভাবে তাকে ঠকিয়ে পরিকল্পিতভাবে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টাকরেছে আপনারা আমার মেয়ের সাথে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পরকীয়ার বানোয়াট অপবাদের সূত্র ধরে আমরা মেয়েটির (মরিয়ম) সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমার স্বামী প্রথমে আমার বাবার কাছে এক লক্ষ টাকা চাওয়ার জন্য বলে আমিও আমার বাবার কাছে বলি কিন্তু বাবা দিতে অপারগ তিনি বিভিন্ন সময়ে একবার ৩০ হাজার আরেকবার ৪০ হাজার যৌতুক আদায় করেছে। পরে একসময় আমাকে বলে তুই যদি আমার বন্ধু রাসেল মিয়ার সাথে একটা কথা বলিস,আমি যা শিখিয়ে দিব তা বলতে পারিস তাহলে তোর বাবা আমাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে না, আমি নাজমুলের পরিবার থেকে এক লক্ষ টাকা আদায় করতে পারব, বউ হিসেবে যদি তুমি এতটুকু হেল্প না করো তাহলে তোমার সাথে আমার সংসার করা হবে না, প্রয়োজনে তালাক দিয়ে দিব! আমি ভীত হয়ে পড়ি, কি বলতে হবে জিজ্ঞাসা করলে তার স্বামী তাকে বলে আমার বন্ধু রাসেল যে প্রশ্ন করবে সেই প্রশ্নের শুধু তুই উত্তর দিবে এবং আমি যা বলে দেই তা বলবে। তুই বলবে আমার পরকীয়া ছিল এবং এটা ভুল হয়ে গেছে, তুমি আমার স্বামীর সাথে এ কথা বলিও না, না বললে আমি তোমাকে বলবো। আমি প্রথমে না করি এমন কথা আমি বলতে পারব না কারণ নাজমুল তোমার খালাতো ভাই আমি তার উপরে এমন মিথ্যা কথা বলতে পারব না। তখন সে আমাকে রাগ করে তালাক দেওয়ার ভয় দেখায়। যখন তালাক দেওয়ার ভয় দেখিয়েছে বারবার আমি আমার বাচ্চা এবং ছোট দুটি বোনের কথা চিন্তা করে ভয়ে তার সাথে টিলার উপর যায়, তখন সে একটা নাম্বারে কল লাগিয়ে দেয় এসময় আমার পরিবারের লোকজন ও সামনে ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে মরিয়ম জানান, রাসেল মিয়া (১৮) পিতা শফিক হাজারী আমার স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু তার সাথে আমার কখনো ফোনে কথা হয়নি বা গোপনে কথা বলার মত কোন সম্পর্কও তার সাথে আমার ছিল না । মরিয়ম উল্টো প্রশ্ন করে বলেন,পৃথিবীতে এমন কোন মেয়ে আছে যে তার গোপন কথা স্বামী ও নিজের ঘরের মানুষের সামনে আরেকজনের সাথে বলবে? আমার স্বামী আমিনুল ইসলাম বাবু আমাকে যেভাবে বলেছে আমি তার কথামতো রাসেলের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি মাত্র। কিভাবে বলছে এমন প্রশ্নের জবাবে মরিয়ম আমাদেরকে জানান, বাবু বলছে আমি যদি তার খালাতো ভাই নাজমুল পিতা মতলিব এর উপর পরকীয়ার অভিযোগ তুলি তাহলে সে ১ লক্ষ টাকা তার কাছ থেকে আদায় করতে পারবে!
মরিয়মের এই জবানবন্দীর প্রেক্ষিতে ফোনে কথা বলা যুবক রাসেল মিয়া পিতা শফিক হাজারীর সাথে মোবাইল ফোনে কল (অনরেকর্ড) কথা বললে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সে জানায় যে ” বাবুর বউ এর সাথে ফোনে কথা বলার মত কোন অভ্যাস আমার নেই, কখনো সে আমার সাথে কথা বলেনি,,বাবু আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল,সে, আমার সাথে ব্ল্যাকমেইল করেছে আমাকে যা শিখিয়ে দিয়েছে আমি শুধু তাই বলেছি। মরিয়ম ভাবিকে যে প্রশ্ন করার জন্য বলেছে আমি তাকে সে-ই প্রশ্ন করেছি, আর বাবু রেকর্ড করেছে, তবে রেকর্ড করার কথা আমি জানতাম না। বাবু তার বউকে কি শিখাইয়া দিছে তাও আমি জানিনা,বাবু আমার সাথে বেইমানি করেছে, আমার জানা মতে ভাবি (মরিয়ম) অনেক ভালো একটি মেয়ে, সে খুবই গরিবের মেয়ে এবং নিরীহ । বাবু তার উপরে মিথ্যা অপবাদ তুলেছে। আর আমাকে এখন ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।”
এই ঘটনায় তোমার জড়িত হওয়াটা উচিত ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে “জি-না আমি বিষয়টা এভাবে জানি না আমাকে সে ব্ল্যাকমেইল করেছে, এটা প্রকাশ হওয়ার পর বুঝতে পেরেছি যে আমার অন্যায় হয়েছে”
এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বিবাহের কাজী উম্মাহাতুল মোমেনীন মাদ্রাসার পরিচালক ও মহাজেরাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এর সাবেক ইমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ ইউনুস খানকে কাবিন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সত্য বলতে আমি ভয় পাই না, আগেও ভয় পাইলি এখনো না, মরিয়ম ও বাবু আমার ছাত্র-ছাত্রী। আমি তাদের ব্যাপারে মিথ্যা বলব কেন, কার স্বার্থে ? ঘটনার দিন রাত এক-দেড়টার দিকে আমাকে নেওয়া হয়েছে, আমি গিয়ে দেখি মেয়ের বয়স ১৪-১৫, আইনি ঝামেলা আছে এরকম বিষয়ের দায়িত্ব প্রশাসনের। অপরদিকে যেহেতু তারা অবৈধভাবে বের হয়ে গেছে বা কোন সম্পর্ক তৈরি হয়েছে এখন এর একটা মীমাংসাও প্রয়োজন। এলাকাবাসী মুরুব্বীদের অনুরোধে দুই লক্ষ টাকা কাবিন ধার্য করে পরবর্তীতে মেয়ের বয়স ১৮ হলে কাবিননামা লিখিত হবে বলে জানান তিনি। তখন আর কারা উপস্থিত ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন -যদি নাম বলতে চাই তাহলে ৫০ জনের অধিক নাম বলতে পারবো যারা ওই সময় ছিল।এই সময় বিবাহের উকিল সামসু মিয়া সহ কয়েকজন মুরুব্বির নাম তিনি বলেন।
বিবাহের উকিল শশুর সামসু মিয়ার সাথে এ প্রতিনিধির কথা হলে তিনি বলেন, ৭০ হাজার টাকার তো প্রশ্নই উঠে না মেয়েটি তো নাবালক ছিল এত বুড়া মহিলা নয়। আজকাল বৃদ্ধ মহিলা হলেও পাঁচ লাখ দশ লাখ টাকা কাবিন দেওয়া লাগে। আর তারা তো পালিয়ে গেছে বয়স কম তারপর নিরীহ পরিবারের এখানে ৭০ হাজার টাকার কাবিন হওয়ার কোন সুযোগ আছে বলে কি আপনারা মনে করেন? পরে তিনি ক্লিয়ার করে বলেন, দুই লক্ষ টাকা কাবিন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আজ পাঁচ বছর ধরে আমি নিজেও চেষ্টা করেছি তারা কাবিনও দিচ্ছে না, ছেলেটিকে মেয়ের বাবার বাড়িতে দাওয়াত খেতে পাঠাইনি কখনো। কেন পাঠাইনি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন মরিয়মের বাবা একসময় চা শ্রমিক ছিল এজন্য!
রমজান মিয়া ও স্থানীয় বিভিন্ন মহলের মুরুব্বিদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়,এ সমস্ত বানোয়াট ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রথমে মহল্লায় বিচার করে। পরে আবার মহাজেরাবাদ পঞ্চায়েতে বেশ কয়েকবার বিচার সালিশ হয়।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে মহাজিরাবাদ এলাকাটি একটি বড় এলাকা যেখানে ছোট বড় ৯ টি মসজিদ রয়েছে। এর প্রতিটি মহল্লা মহল্লায় আলাদা আলাদা পঞ্চায়েত রয়েছে এবং সেখানে কেন্দ্রীয় একটি পঞ্চায়েত রয়েছে এবং একটি কেন্দ্রীয় মসজিদ রয়েছে। একই সাথে রয়েছে মহাজিরাবাদ আইন-শৃঙ্খলা কমিটি নামে একটি সুশৃংখল কমিটি এই কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহাদ মিয়া নামে একজন ব্যক্তি, আপনাকে এলাকার আপামর জনগণ সাদা মনের মানুষ হিসাবে মান্য করে থাকে, যা স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে জানা গেছে।
মহল্লার বিচারের শেষ না হওয়ার পর মহাজিরাবাদ আইন শৃঙ্খলা কমিটি ও সকল পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বিচার সালিশে কয়েকবার বসেও মরিয়ম বেগমের পরকীয়া সংক্রান্ত কোন দোষ প্রমাণ করতে পারেনি। দোষ প্রমাণ না করতে পেরে বিচারের একপর্যায়ে হঠাৎ করে উপস্থিত বিচারকদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বিনা বিচারে মরিয়মকে বিচারকদের উপস্থিত থাকাকালীন সময়ে এক ঘরের পাশে ডেকে নিয়ে একসাথে তিন তালাক দিয়ে বসে। শেষ তালাক বলার সময় পাশে থাকা এক ব্যক্তি তার মুখে চেপে ধরে। এতে বিচারে আসা লোকজন কিছুটা উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
এরই সূত্র ধরে পরবর্তীতে মুহাজেরাবাদ পুরো এলাকা জুড়ে পঞ্চায়েত ও আইনশৃঙ্খলা কমিটি যখন বিচার হয় তখনও স্থানীয় বিচারে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও স্থানীয় পঞ্চায়েত আইন শৃঙ্খলা কমিটির উপস্থিতিতে সাধারণ জনগণ বাবু ও তার পরিবারের লোকজনের বিচারের প্রতি অনীহা দেখিয়ে বিচারকদের সালিশি রায় কে না মেনে কালক্ষেপন করার কারণে শতাধিক লোক ক্ষেপে যায় এবং তাদের আচরণের জন্য তার উপযুক্ত বিচার দাবি করে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যেতে থাকে যে কোন সময় একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল।
এক পর্যায়ে উপস্থিত মানুষ উত্তেজিত হয়ে উঠলে গ্রাম্য বিচারকরা বিষয়টিকে উভয় দিক থেকে কিভাবে রক্ষা করা যায় সেজন্য বিচারকরা উপস্থিত সবাইকে শান্ত করে, উপযুক্ত বিচার হবে বলে আশ্বাস দেয়। তাৎক্ষণিক বিচারকরা পূর্বের রায় অর্থাৎ ২ লক্ষ টাকা নির্ধারিত কাবিনসহ যৌতুক বাবদ নেওয়া ইত্যাদি মিলিয়ে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকার রায়কে উপেক্ষা করার কারণে এবং পঞ্চায়েতের ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির রায় না মানার কারণে এবং স্থানীয় উত্তেজিত জনতাকে প্রশমিত করতে তাৎক্ষণিক সাময়িকভাবে হাসিম মিয়ার পরিবারকে সমাজ চ্যুত করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন এর শরণাপন্ন হলে তিনি পঞ্চায়েত এবং আইনশৃঙ্খলা কমিটির লোকদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা স্বীকার করেন, তখন উপজেলা কর্মকর্তা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, এ সমস্ত ঘটনা আইনি ভাবে নিষিদ্ধ সেটা পূর্বে ছিল এখন নেই আপনারা এর সমাধান করুন। নির্দেশ মতো সাময়িকভাবে সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি তারা তুলে নেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাজেরাবাদ আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সহ-সভাপতি ও স্থানীয় মুরুব্বী আমিনুল ইসলাম হরমুজ আমাদেরকে জানান সভাপতি সাহেবের শতবর্ষী মাতা অসুস্থ থাকায় এবং উনার স্ত্রী প্যারালাইস রোগে আক্রান্ত থাকার কারণে তিনি বিষয়টির দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন এবং আমি উপজেলা কর্মকর্তা জনাব ইসলাম উদ্দিন সাহেবের নির্দেশ মত গত ২৫-২৬ দিন পূর্বেই সমাজ চ্যুতের ঘটনাটি উড্ড করা হয় এবং হাসিম মিয়া ও তার ছেলে সহ কয়েকজন সভাপতির (আহাদ মিয়ার) বাসায় বসে চা-পান খেয়ে সমাধান করে দেওয়া হয়। তবে বিবাহ সংক্রান্ত কাবিন নামার পয়সা ও যৌতুক বাবদ দেওয়াসহ অন্যান্য বিষয়ের রায় বলবৎ থাকলেও যেহেতু বিজ্ঞ আদালতে মামলা করা হয়েছে এখন আর এটা আমাদের হাতে নেই, আদালত যে রায় প্রদান করেন তা অবশ্যই সবাইকে মেনে নিতে হবে।
এদিকে রমজান মিয়া দাবি করেন,আমার মেয়েকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিচ্ছে মামলা তোলার জন্য না তুললে মেয়ের ঘরের তিন বছর বয়সী নাতনিকে লুকিয়ে উল্টো মামলা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার উকিলের সাথে কথা হয়েছে আমরা বিষয়টি আদালতকে জানাবো।
উপরোক্ত বিষয়ে স্থানীয় বেশ কয়েকজন মুরুব্বিও সালিসি ব্যক্তিত্বদেরসহ সাধারণ লোকদের সাথে আমাদের টিমের কথা হয়। বিশেষ করে মোহাজেরাবাদ পঞ্চায়েতের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি আব্দুল আহাদ, একই কমিটির সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম হরমুজ (সাবেক মহাজেরাবাদ হাই স্কুল কমিটির সভাপতি), স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সেক্রেটারি ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আলি আমজাদ, মহাজেরাবাদ কিন্ডারগার্ডেন এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পঞ্চায়েতের মুরুব্বি মোঃ ইসমাইল হোসেন,
স্থানীয় মুরুব্বী সিরাজ মিয়া (৭০)
স্থানীয় মুরুব্বী শামসুমিয়া (৫০) সহ প্রমুখ।
তারা রমজান মিয়ার বক্তব্যকে সত্য বলে জানান তারা বলেন। হাসিম মিয়া ও তার ছেলে ওরা মামলাবাজ, দীর্ঘদিন ধরে তাদের মামলা মোকাদ্দমার করায় অভ্যস্ত অপরদিকে নওমুসলিম রমজান মিয়া খুবই নিরীহ তার কোন রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজন মহাজেরাবাদ এলাকায় নেই। আমরা পঞ্চায়েতের লোক হিসেবে এই অঞ্চলটিকে মাদক সন্ত্রাস ও বিভিন্ন অপরাধ থেকে মুক্ত রাখার স্বার্থে দেশ ও সরকারের সকল কাজে সহযোগিতা করে আসছি। সীমান্তবর্তী এলাকায় হিসাবে যখন তখন পুলিশ প্রশাসন এর সাথে যোগাযোগ করা কখনো কখনো সময়ের ব্যাপার, এজন্য আমরা সরকারের বিধান মতে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।
এক প্রশ্নের জবাবে পঞ্চায়েতের মুরুব্বিদের একজন @ জানান, পঞ্চায়েতের সাথে বেয়াদবি করার কারণে এলাকায় একটি মারাত্মক বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয় অপরদিকে মেয়েটির জীবন সন্তান ও মানসম্মানের দাবি হিসেবে উভয় দিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা সাময়িক সময়ের জন্য তাদেরকে পঞ্চায়েত থেকে আলাদা থাকতে বলেছিলাম পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন এর কর্মকর্তা জনাব ইসলাম উদ্দিন সাহেবের নির্দেশমত আজ থেকে প্রায় ২৩-২৪ দিন পূর্বে বিষয়টি সমাধান করা হয়। এসময় পঞ্চায়েতের সভাপতি আব্দুল আহাদের শতাধিকবর্ষী মাতা অসুস্থ এবং উনার নিজের স্ত্রী প্যারালাইসড থাকায় পঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি সমাজচ্যুতের ঘটনাটি সমাধান করে দেন,যেহেতু দেশীয় আইনে ঠিক নয় উপজেলা কর্মকর্তা ইসলামুদ্দিন সাহেবের নির্দেশে আমরা তা উড্ড করে ফেলি।
স্থানীয় মুরুব্বীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত কর্তৃক যে দুটি রায় দেওয়া হয়েছিল তার একটি বাতিল হওয়ার পরেও একটি চিহ্নিত অপরাধী মহল এটিকে নিয়ে বারবার জল ঘোলা করে শিকার করার চেষ্টা করছে।
আপনারা ফেসবুক দেখলে বুঝতে পারবেন অথচ এই নিরীহ অসহায় মানুষের মেয়ে এবং তার তিন বছর বয়সী বাচ্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে ওদের কোন মাথা ব্যাথা নেই, বিশ্বাস না হলে আপনারা ওদের লেখনি এবং ভিডিওগুলো ভাল করে পরিচালনা করলে দেখতে পারবেন কিসের কারণে কোন স্বার্থে এগুলো করছে আমরা জানিনা, সেটা আপনারা খুঁজে বের করবেন।
একই ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে কোন কোন মুরুব্বী উত্তেজিত কন্ঠে বলেন রমজান মিয়ার টাকাও নাই তার বিচার ও নাই।
প্রসঙ্গত আজ থেকে প্রায় ২০-২৫ দিন পূর্বে সৃষ্ট ঘটনার উপজেলা কর্মকর্তার নির্দেশে (সমাজ চ্যুতির ঘটনা) সমাধানের পরেও কেন আবার নতুন করে বিষয়টি জনসম্মুখে আসছে এ বিষয়ে এবং ২ লক্ষ টাকার কাবিনের স্থলে ৭০ হাজার টাকার কাবিন! কোনটি সঠিক? বিবাহের পূর্বে মেয়েটিকে অপহরণ করার সময় ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল এটি কি সত্য? যে কারণে এখন পর্যন্ত মেয়েটির প্রতি বাবুর অবিশ্বাস? তাছাড়া পরকীয়ার ব্যাপারে অভিযোগকারী হাসিম মিয়া ও তার ছেলে আমিনুল ইসলাম বাবুর পরিকল্পিত বিষয় কিনা? রাসেল নামে জনৈক যুবকের সাথে পরকীয়ার গল্প তৈরি করার ঘটনা কে রাসেল কেন মরিয়মের স্বামী আমিনুল ইসলাম বাবুর ব্ল্যাকমেইল বলে দাবি করছে? কোন মেয়ে কি পরিবার এবং অপরিচিত মানুষের সামনে নিজের কথা স্বীকার করে? পাঁচ বছরের বৈবাহিক জীবনে কেন জামাতা হিসেবে একদিন ও তার শ্বশুর বাড়িতে (রমজান মিয়ার) যাইনি? ইসলাম ধর্মের পরকীয়া একটি বড় ধরনের অপরাধ কিন্তু এই অপরাধ নিশ্চিত করতে হলে কি ধরনের সাক্ষ প্রয়োজন? স্থানীয় কোন ইমাম বা মাদ্রাসার কারো কাছে এ বিষয়ে নালিশ করা হয়েছে কিনা? করলে শরীয়তের বিধান কি কিছু বলেছে কিনা? ইত্যাদি নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে আমরা আমিনুল ইসলাম বাবু ও তার বাবা হাসিম মিয়ার সেলফোনে বারবার যোগাযোগ করেও তাদের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়নি। নিম্নে বর্ণিত দুটি মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে নাম্বার দুটি হচ্ছে (01339××××37,01618××××87)। পরবর্তী ভিডিও নিউজে বিস্তারিত দেখুন