কাকরাইলে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ভিপি নুর আইসিইউতে, উত্তাল রাজনৈতিক অঙ্গন
মোঃ সোহেল মিয়া
ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅধিকার পরিষদের মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ও সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনাপ্রবাহ : প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা বিজয়নগর থেকে কাকরাইলের দিকে মিছিল নিয়ে আসার সময় জাপা কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বলপ্রয়োগে বহু নেতা-কর্মী আহত হন।
আহতের অবস্থা: গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানিয়েছেন, নুরের নাক ভেঙে গেছে, চোখ ও মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে এবং বর্তমানে তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী আহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া : গণঅধিকার পরিষদ: সংগঠনটি হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। তারা দাবি করেছে, হামলায় দায়ীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বিএনপি: মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘটনাকে নিন্দনীয় আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “নুরের জীবন রক্ষায় সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।” জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য বিরোধী দলও হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। আল্লামা মামুনুল হক: তিনি এই হামলাকে একটি “পরিকল্পিত হত্যার ষড়যন্ত্র” বলে উল্লেখ করেছেন।
সরকারি প্রতিক্রিয়া : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এ ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিবাদ কর্মসূচি : হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। দেশজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও সংহতি প্রকাশ করেছে।
কাকরাইলের সংঘর্ষ ও নুরুল হক নুরের গুরুতর আহত হওয়া বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে। গণঅধিকার পরিষদের আলটিমেটাম ও বিরোধী দলগুলোর প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে। সরকারি তদন্তের ফলাফল এবং নুরের চিকিৎসার আপডেট আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।