দুর্গাপুর পৌরসভায় শতবর্ষী কাঁচা সড়ক যেন অভিশপ্ত, জনদুর্ভোগ চরমে
মোঃ শাহিনুর রহমান আকাশ
স্টাফ রিপোর্টার ( রাজশাহী)
রাজশাহী জেলা দুর্গাপুর উপজেলার পৌরসভা ৪ নং ওয়ার্ডের পার চৌপুকুরিয়া গ্রামের সরর্দারপাড়া মোড় হতে গাঙ্গান্দী পাড়ার ভেতর দিয়ে হাজীপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা যেন অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শতবর্ষ পুরনো এই কাঁচা রাস্তাটি বছরের পর বছর ধরে মেরামতের অপেক্ষায় থাকলেও পায়নি উন্নয়নের ছোঁয়া। শুকনো মৌসুমির ধুলোর রাজত্ব আর বর্ষায় হাটু সমান কাদামাটি এই দ্বৈত দুর্ভোগে প্রায় ৬০০ শতাধিক মানুষ।
এই তিনটি পাড়ার মানুষের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই সড়কটি।
সরেজমিনে দেখা যায়।, দীর্ঘ এই সড়ক জুড়ে কোথাও কোথাও হাটু সমান কাদা জমে আছে। পথচারীদের হাতে স্যান্ডেল,পরনে কাদা লেপটে থাকা পোশাক এই যেন নিত্যদিনের চিত্র। গবাদি পশুর চলাচল বন্ধ, হুইলচেয়ারে রোগী নেওয়া অসম্ভব,শিশু ও গর্ভবতী নারীদের চলাচল ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ।
মৎস্য চাষী ও বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন বলেন, আমরা পৌরসভায় রাস্তাটির জন্য আবেদন করেছি এবং আশায় আছি রাস্তাটি যেন দ্রুত হয়ে যায়।
গাঙ্গান্দী পাড়ার মৃত রফিকুলের জামাই মোঃ সুজন ইসলাম বলেন,
আমার শ্বশুর মারা গেছেন তাই শাশুড়ি আমাকে যে কোন প্রয়োজনে ফোন দিয়ে ডাকেন কিন্তু এই সর্বনাশা রাস্তার জন্য আমার যেতে একটুকু মন চায় না।
স্কুল ছাত্র রিফাত বলেন,
ভাই আমি ভালো ছাত্র ছিলাম। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য আমি কলেজ এবং প্রাইভেট কোনোটাতেই ঠিকভাবে যেতে পারি না। যার প্রভাবে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে।
ভুক্তভোগী কামাল বলেন, আমি নেংটি মেরে রাস্তা পার হই তাতেও দুঃখ নেই কিন্তু একজন গর্ভবতী মহিলার পেটের ব্যথা উঠলে তাকে কিভাবে নিয়ে যাব আমরা।
সর্দারপাড়ার আকবরের ছেলে মোঃ
কুদ্দুস আলী বলেন,
আমরা পৌরসভার মানুষ তারপরেও এমন একটি কর্দমাক্ত ও অসমান রাস্তা দিয়ে আমাদের চলাফেরা করতে হয় এটা বড় দুঃখের বিষয়।
দুর্গাপুর পৌরসভার প্রকৌশলী ও প্রশাসক শাহাবুল হক বলেন, এই রাস্তা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি এবং আবেদনও পেয়েছি। তাই রাস্তার কাজ বরাদ্দ শুরু হলেই এই রাস্তাটির কাজ আমরা করে দেবো ইনশাআল্লাহ।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন,আমি নিজে রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি এবং পথচারীদের কষ্ট দেখে নিজেই বিচলিত হয়েছি। তাই বরাদ্দ আসলে প্রথমেই রাস্তার কাজটি শুরু হবে।
পরিশেষে এলাকাবাসী ও পথচারীরা আশা করছেন, দুর্ভোগের চিত্র ও জনসাধারণের আকুতি যেন এবারও আর উপেক্ষিত না হয়, এবং দ্রুত এই সড়কটি পাকাকরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে উপরমহল।