জোয়ার এলেই ডুবে যায় বিদ্যালয়ের মাঠ।
মোঃআরিফুর রহমান
ক্রাইম রিপোটার, ঝালকাঠি।
দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যখন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে, তখন নলসিটির ৮১ নং ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বেহাল অবস্থায় আছে।
মাত্র চার কক্ষবিশিষ্ট একটি একতলা ভবনে চলছে বিদ্যালয়টির পাঠদানসহ যাবতীয় কার্যক্রম। এর মধ্যে একটি কক্ষ শিক্ষকদের বসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকি তিনটিতে চলছে পাঁচটি শ্রেণির শিশুদের পাঠদান। কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়া বিদ্যালয়টিতে এ অবস্থা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নে ৮১ নং ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। দ্রুত সমস্যা সমাধান করে বিদ্যালয়টিকে আধুনিক ও মানসম্পন্ন একটি বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার দাবি শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আফজাল আকন বলেন, এ এলাকার এই একটিমাত্র সরকারি বিদ্যালয়। এর দুরাবস্থা চোখে না দেখলে বোঝার উপায় নেই। ওখানে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশে অনেক ঘাটতি আছে। আরেক অভিভাবক ভবানীপুর গ্রামের জালাল হোসেন ডাকুয়া বলেন, উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল আছে, সুন্দর ভবন আছে, সুন্দর খেলার মাঠ আছে কিন্তু এ বিদ্যালয়টি অবহেলিত রয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৪৩ সালে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর গড়ে ওঠে বিদ্যালয়টি। সে সময়ে বিদ্যালয়টির নামে এ জমি দান করেন ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়। ১৯৯২ সালে নির্মিত হয় চার কক্ষের বর্তমান এই একতলা ভবন। এ ভবনেই চলছে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম। বর্তমানে শতাধিক শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন এ বিদ্যালয়ে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে গরু ছাগল বাঁধা রয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠ খানাখন্দে ভরা, খেলাধুলার অনুপযোগী। তারপরও এলাকার ছেলেরা কাঁদার মধ্যে ফুটবল খেলছে। মাঠের দুই পাশ-ই রাস্তার সাথে সংযুক্ত। রাস্তার অবস্থা আরও বেহাল।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্নিগ্ধা বলে, ‘বৃষ্টি হলে ক্লাসরুমে পানি পড়ে। মাঝেমধ্যে পলেস্তারা খসে পড়ে। আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।’ একই শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ হোসেন বলে, ‘একটিমাত্র টয়লেট থাকায় টয়লেট ব্যবহার করতে সমস্যা হয়।’ একজন শিক্ষক বলেন, মাঠটি খেলাধুলা করার উপযুক্ত করা দরকার। বাউন্ডারি ওয়াল না থাকলে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ কামরুল হাসান বলেন, আমাদের তিনটি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।প্রথমত একটি ভবন দরকার, বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে শিক্ষার্থীদের তথা বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তৃতীয় জরুরী বিষয় হচ্ছে মাঠটি বালু দিয়ে ভরাট করা।