তদন্ত কর্মকর্তা ফাঁড়ি ইনচার্জকে বাঁচাতে তৎপর
যশোর রেলওয়ে জংশন নিয়ে যাত্রীদের গুরুতর অ,ভি,যোগ
বিশেষ প্রতিনিধি
যশোর জংশন তথা রেলওয়ে স্টেশনে আইন শৃঙ্খলার সামান্য উন্নতিও হয়নি। ফাঁড়ি ইনচার্জ আইসি এস আই (নি:) মিজানুর রহমান এখনো বহাল। চলছে তার সকল অপকর্ম। বখাটে মাদক কারবারি চুটিয়ে কারবার চালাচ্ছে। ছিনতাই হচ্ছে স্টেশন এলাকায়।
রেলযাত্রী রা অভিযোগ করেছেন, একের পর এক অঘটন ঘটছে, তবু ইনচার্জ নির্বিকার। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে যশোর রেলস্টেশন এলাকা এখন নাজুক বা ঝুঁকি পূর্ন অবস্থায়। এসবের জন্য দায়ি ফাঁড়ি ইনচার্জ ও তার সহকারীরা। মাদক কারবার, ডিউটি ফাঁকিসহ অগণিত অভিযোগ ফাঁড়ি ইনচার্জ আই সি এস আই (নি:) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
এমনকি তার বিরুদ্ধে লাশ উদ্ধারকারি পরিছন্নতা কর্মীর মাসিক বরাদ্দর টাকা আত্মসাত করারও অভিযোগ রয়েছে। প্রতি মাসে পরিছন্ন কর্মীর বরাদ্দ ৫০০০ টাকা। কিন্ত যশোরের পরিছন্নকর্মী সেই ভাতা পাননা।
সূত্র জানায়, কনস্টেবল আশরাফুল, আরএসবি কনস্টেবল তাহের, কনস্টেবল আলামিন আইসির সাথে মিলে যশোর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি তে সকল প্রকার অপকর্ম করেন।
আনুমানিক ১০ দিন আগে পরিছন্ন কর্মী মোঃ রকেট অর্থ না পাওয়ার অভিযোগ করেন। চারদিন পূর্বে রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের তদন্তকারী কর্মকর্তা রকেটের সাথে কথা বলেছেন। অভিযোগ উঠেছে তিনি যথাযথ তদন্ত করেননি। ফাঁড়ি ইনচার্জ এর বিরুদ্ধে ওঠা আর একটি অভিযোগেরও তদন্ত সম্পন্ন করেছেন একই তদন্ত কর্মকর্তা।
খুলনা রেলওয়ে জেলার ডিআই ১ মোঃআবু হোসাইন (ইন্সপেক্টর) এ বিষয়ে তদন্ত করলেও অভিযোগ উঠেছে তাকে প্রভাবিত করে ফাঁড়ি ইনচার্জ নিজের পক্ষে রিপোর্ট করিয়ে নিয়েছেন। একই তদন্ত কর্মকর্তা এসব কাজে বাঁধা প্রদানকারী পুলিশ রাজীব হাসানকে (বদলিকৃত) ফাঁসানোর ও চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি রাজীব হাসানের বিরুদ্ধে শাস্তি গ্রহণের সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। দুটি তদন্ত এক সূত্রে বাঁধা বলে অনুমিত হচ্ছে।
যাত্রীরা অভিয়োগ করেছেন, যশোর রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়িতে প্রকাশ্যে মাদক বেচা কেনা হয়। আর এসব হলেও কেউ ফাঁড়ি ইনচার্জ কে কৈফিয়ত তলব করেনা কেন তা তাদের বোধগম্য নয়।
যশোর রেলওয়ে জংশন তথা স্টেশন এলাকাটি মাদক, চোরাকারবারি, ছিনতাইকারী বাটপারে ভরা। স্টেশন এলাকা, আশে পাশে প্রকাশ্যে ইয়াবা গাঁজা, ফেন্সিডিল বেচা কেনা হয় বলে জোর অভিযোগ। শান্তিকামী যাত্রীরা এসব দেখে শঙ্কিত হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ (আইসি) এস আই (নি:) মোঃ মিজানুর রহমানের মদদেই এসব অসামাজিক অপকর্ম চলছে।
অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে এই যশোর রেলস্টেশনটি মাদক, চোরা কারবারিদের আখড়া। জানা যায়, জিআরপি পুলিশ ফাঁড়িতে মাদক দ্রব্য বেচা কেনা হয়। এসব নিয়ন্ত্রণ করেন ফাঁড়ি ইনচার্জ এস আই (নি:) মো: মিজানুর রহমান। তার পক্ষে কনস্টেবল আবু তাহের, কনষ্টেবল মোঃ আশরাফুল ইসলাম সব কিছু দেখা শুনা করেন।
সূত্র জানায়, জি আর পি ফাঁড়ি ইনচার্জের অন্যায় অপকর্মের প্রতিবাদ করায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে গত ২১ জুলাই রেলওয়ে গোয়েন্দা পুলিশ রাজীব হাসান কে বদলি করেন। অথচ অবৈধ ১২০ পিচ ইয়াবাসহ চিন্নিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে চাকরিরত জৈনক সিপাহি কে রাজীব হাসান ১২০ পিচ ইয়াবা সহ ধরে গ্রেফতার করেন। মাদক কারবারি সরকারি কর্মচারীকে আটক করে ফাঁড়ি ইনচার্জ এর কাছে পেশ করেন গোয়েন্দা পুলিশ রাজীব হাসান। ঘটনাটি উল্টো খাতে নিয়ে মাদক ব্যাবসায়ীদের দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ রাজীব হাসান কে লাঞ্চিত করা হয়। এরপর মাদক ব্যাবসায়ীদের দিয়ে রাজীব হাসানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পর্যন্ত করা হয়। অভিযোগকারী অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অভিযোগ প্রত্যাহার করলেও রাজীব হাসানকে এখনো দোষমুক্ত করা হয়নি।
প্রশ্ন: ১২০ পিচ ইয়াবা এবং মাদক কারবারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন ব্যা বস্থা নেওয়া হয়নি। পুলিশের কোন মহল বিষয়টি বলছে না। এ বিষয়ে যশোর জিআরপি পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ সদুত্তর দেননি।
সূত্র জানায় গোয়েন্দা পুলিশ রাজীব হাসান কে দায়মুক্তি না দিয়ে উল্টো দোষী করতে তৎপর যশোর রেলওয়ে ফাঁড়ি ইনচার্জ মিজানুর রহমান। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় তার আর্থিক লেনদেনে তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ রাজীব হাসান কে দোষী করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
জিআরপি কর্তা এবং মাদক কারবারি মদদে এর আগেও যশোর রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে যাত্রীদের মালমাল-টাকা পয়সা ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছেন যশোর জিআরপির কনস্টেবল আনিচুর রহমান।
খুলনা রেলওয়ে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) নিকোলিন চাকমা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি। তবে তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যশোর রেলস্টেশনের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত হয়েছে। এখনো রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়নি।