বাগেরহাট-৩ আসন কর্তনের প্রতিবাদে মোংলায় সর্বাত্মক হরতাল-অবরোধ কাল
দাবি না মানলে সারা বাংলাদেশ অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি নেতৃবৃন্দের।
স্টাফ রিপোর্টার মুহা: নাইম বিন রফিক (মোংলা প্রতিনিধি)
বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসন কর্তনের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সর্বদলীয় রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে মোংলায় সর্বাত্মক হরতাল-অবরোধ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রবিবার ভোর ৬টা থেকে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হবে।
শনিবার বিকেলে মোংলা মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রস্তুতি সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম, এনসিপি’র পৌর ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, “মোংলা ও রামপালের জনগণের দীর্ঘদিনের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার ষড়যন্ত্র চলছে। বাগেরহাট-৩ আসন কর্তন মানে মোংলার মানুষের কণ্ঠরোধ করা। এ সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী
ভোর ৬টা থেকে মোংলার সব প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকবে।
সকাল ৯টায় সর্বদলীয় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করবে।
দুপুর ১২টায় মোংলা পৌরসভা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
দিনব্যাপী শহরে সকল যানবাহন, দোকানপাট, অফিস-আদালত, শিল্পকারখানা, বন্দর ও ইপিজেড বন্ধ থাকবে।
তবে বিশেষ প্রয়োজনে এম্বুলেন্স চলাচল, বোর্ড পরীক্ষা, ফার্মেসি, মাছ ও কাঁচা বাজার খোলা থাকবে।
মোংলার সকল স্কুল-কলেজও বন্ধ থাকবে
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মোংলা পৌর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব জুলফিকার আলী।
সভায় বক্তারা বলেন, “যদি দ্রুত বাগেরহাট-৩ আসন কর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল না করা হয় তবে শুধু মোংলা নয়, প্রয়োজনে সারা বাংলাদেশ অচল করে দেওয়া হবে। জনগণের দাবি আদায়ে আমরা জীবন দিয়েও আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
সাধারণ মানুষ বলছে, আসন কর্তনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে মোংলার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। এতে বন্দরের গুরুত্ব কমে যাবে এবং দীর্ঘদিনের অবহেলার শিকার এই অঞ্চলের মানুষ আরও পিছিয়ে পড়বে। তাই সবাই এ আন্দোলনে এক কাতারে দাঁড়িয়েছে।
আগামীকালের হরতাল-অবরোধে শহরজুড়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ফার্মেসি ও জরুরি সেবা খোলা রাখার কারণে জরুরি রোগী ও প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কেনাকাটায় জনগণের সুবিধা হবে বলে আয়োজকরা আশ্বাস দিয়েছেন।
সভা শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল মোংলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরসভা চত্বরে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। হাজারো জনতার অংশগ্রহণে এ মিছিল শহরজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা, প্রতিবাদ ও ঐক্যের আবহ তৈরি করে।