টঙ্গীবাড়ীতে চলাচলের রাস্তা না রেখেই বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ: ভোগান্তিতে স্থানীয় পরিবার
হোসেন হাওলাদার
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার যশলং ইউনিয়নের নয়না গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে এক পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয় ভবনের পেছনে বসবাসরত পরিবারটির জন্য চলাচলের রাস্তা না রেখেই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে ওই পরিবার বিদ্যালয়ের মূল গেট ব্যবহার করছেন, যা দীর্ঘমেয়াদে নানা জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নয়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের পেছনে বসতবাড়ি রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াদ হোসেন ফারুকের। বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো স্থায়ী রাস্তা না থাকায় পরিবারটি প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের সামনে একটি নিচু জমি রাস্তা হিসেবে ব্যবহারের শর্তে ভরাট করা হলেও ভবন নির্মাণের সময় সেই রাস্তা রেখে না দিয়ে পুরো জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী রিয়াদ হোসেন ফারুক বলেন, “বিদ্যালয়ের সামনে একটি নিচু জমি ভরাট করে দেওয়ার সময় আমাকে চলাচলের রাস্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আমি নিজ উদ্যোগে ভরাটও করি। কিন্তু ভবন নির্মাণের সময় সেই রাস্তা বাদ দিয়ে পুরো জমিতে ভবন তোলা হয়েছে। এখন আমার পরিবার বিদ্যালয়ের মূল গেট দিয়েই চলাচল করছে। এটি আমাদের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে। আমি একটি স্থায়ী রাস্তার সমাধান চাই।”
তিনি আরও জানান, এ সমস্যার সমাধানের জন্য তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেলা প্রশাসকের কাছে এবং ২০২৫ সালের এপ্রিলে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “এই জায়গা ভরাটের সময় রাস্তা নিয়ে আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।”
স্থানীয় সমাজসেবক সিরাজ তালুকদার জানান, “জমি ভরাটের সময় বিদ্যালয়ের জন্য কিছু সহযোগিতা করা হলেও স্থায়ী রাস্তা দেওয়া হবে — এমন কোনো লিখিত চুক্তি ছিল না। তবে পরিবারটির চলাচলে বিদ্যালয় গেট ব্যবহারে কোনো বাধা নেই।”
এদিকে এলাকাবাসীর একাংশ মনে করেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী পরিবারের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় ও পূর্ব পরিকল্পনার অভাবেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ছাড়া সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এই বিরোধ মীমাংসার জন্য ইতোমধ্যে যশলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দুই দফা বৈঠকও হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষকে নিয়ে আবারও বসবো।
ভুক্তভোগী পরিবারটি এখন স্থায়ী চলাচলের রাস্তা পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।