নারায়ণগঞ্জে এক বছরে ২৬ টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। অর্ডার কমে যাওয়া ও আর্থিক সংকটের কারণে এসব কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলছেন মালিক পক্ষ।
তারা আরও বলছেন, পোশাক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে মহামারী (কোভিড নাইনটিন) করোনার সময় থেকে। এটা আরও বাড়িয়ে দেয় ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ।
কারখানাগুলো দুর্বল অবস্থায়। এরপর ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার, উৎপাদন অপ্রতুলতা,আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহ নানা কারণে পোশাক কারখানা গুলোতে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ছাড়াও কারখানায় শ্রমিকদের কেউ কেউ উস্কানিমূলক কথা বার্তা বলে থাকে। বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি নিয়ে শ্রমীকদের আন্দোলনের কারণে কারখানায় কাজের ব্যাঘাত ঘটছে।
নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে বলছে, জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১ হাজার ৮৩৪ টি পোশাক কারখানা রয়েছে।
বিভিন্ন কারণে এক বছরে ২৬ টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক।
তবে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্র বলছে, জেলায় নিবন্ধনকৃত পোশাক কারখানা ১ হাজার ১০ টি।
এরমধ্যে এক বছরে ৯ টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া এএসটি গার্মেন্টসের মালিক মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, অর্ডার কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কারণে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গার্মেন্টস ও সোয়েটারস শ্রমীক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি এমএ শাহিন বলেন, অর্ডার কমে যাওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি কারখানার মালিক পক্ষ আওয়ামী লীগপন্থী হওয়ায় অব্যবস্থাপনার কারণে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়েছে।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ ৪ , জোনের পরিদর্শক সেলিম বাদশা বলেন, কারখানা বন্ধের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। তবে বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি অনেক কারখানা নতুন করে উৎপাদনে গেছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক রাজিব চন্দ্র ঘোষ বলেন, বিভিন্ন কারণেই এক বছরে কয়েকটি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোরশেদ সরোয়ার বলেন,পট পরিবর্তনের কারণেই কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে তা নয়। কয়েকটি কারখানা আগে থেকেই বন্ধ হওয়ার উপক্রম ছিল। কারখানাগুলো দুর্বল অবস্থায় ছিল।
এর মূল কারণ ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ। তিনি আরও বলেন, পোশাক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে মহামারী (কোভিড নাইনটিন) করোনার সময় থেকেই। ব্যাংকের সুদ হার বেড়ে গেল, অর্ডার কমতে থাকা থেকেই কারখানাগুলো দুর্বল হচ্ছিল।
পাশাপাশি পট পরিবর্তনের পর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল না। সব মিলিয়ে আরও নাজুক অবস্থা তৈরি হলে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন,বায়ার না পাওয়া, আর্থিক সংকট সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে শিল্প কারখানা বন্ধ হয়েছে।
কিছু মালিক পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন,তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। এসব কারণে কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানায় উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়েছে।