আব্দুস সালাম স্বপন, হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আঞ্জুরুল হক খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, কাজী আজম, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এস এম তমাল আহমেদ, সদস্য সচিব আনছারুল হক রানা প্রমুখ। এসময় যুবদল ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল,শ্রমিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন,, যশোর বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জেলা। প্রাচীন এই জনপদের রয়েছে নিজস্ব কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্য। আর রাজনৈতিকভাবেও অত্যন্ত সমৃদ্ধ অতীত রয়েছে। যশোর একটি ঘনবসতিপূর্ণ জেলা। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহাবস্থানের ঐতিহ্য ছিল, যদিও ফ্যাসিস্ট সরকার তা ধ্বংস করে। সীমান্তবর্তী শহর হিসাবে এ জেলার সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার রয়েছে যোগাযোগের চমৎকার নেটওয়ার্ক। যশোর তাই খুলনা বিভাগের মধ্যে পুরই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিয়ে আছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি একটি মহল যশোরের দীর্ঘদিনের ইতিহাস ঐতিহ্যের বিচ্যুতি ঘটিয়ে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ইতোমধ্যে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনুস জাতির সামনে স্পষ্ট করেছেন।
নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আপামর জনসাধারণ ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে সংসদ নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ঠিক এমন নাজুক মুহূর্তে সংসদীয় আসন পূনর্বিন্যাসের যে কোন চেষ্টার আমরা বিরোধিতা করি। এর কোন প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বর্তমান অবস্থার ওপর ভিত্তি করেই যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়েছে। শুধুমাত্র ২০০৮ সালের অনির্বাচিত সরকারের সময়ই এর ব্যত্যয় ঘটানো হয়। এবং সেই নির্বাচনের অনিয়মই দেশে অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করে।
যশোর-৩ (সদর) আসনটি এতদাঞ্চলের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার সূতিকাগার। ১৪ টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনটি আমাদের মর্যাদা ও আত্মসম্মানের প্রতীক। প্রায় ২৫ লাখ মানুষের স্বপ্ন আশা আকাঙ্খা ঘিরে আছে এই সংসদীয় আসন। এর কোন ব্যবচ্ছেদ কিংবা পরিবর্তন আমরা মেনে নেবোনা। ঠিক তেমনি যশোর-৬ নির্বাচনী এলাকার পরিবর্তনও কোনভাবেই কাম্য নয়।
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যে সমস্ত আসনের সীমানা চূড়ান্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, তারমধ্যে যশোরের ৬টি আসনও ছিল। কিন্তু আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, আগামী ২৫ আগস্ট যশোর-৩ ও যশোর-৬ সংসদীয় আসনের দীর্ঘদিনের চলমান ও পুনঃঘোষিত সীমারেখা নিয়ে কিছু ব্যক্তির আপত্তি প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আমরা আশঙ্কা করছি যে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক ঘোষিত ফেব্রুয়ারী ২০২৬ ইং সময়সীমার মধ্যে মহান জাতীয় সংস নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগকে বিলম্বিত করার লক্ষ্যে একটি মহলের অব্যাহত অপচেষ্টার অংশ এটি হতে পারে। আমরা মান করি একটি নির্ধারিত সীমারেখায় বছরের পর বছর নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অত্র আসনের ভোটারদের ভেতর একটি পরিবারের মতো আসনভিত্তিক যে ঐক্য, সম্প্রীতি ও বন্ধন তৈরি হয়েছে সেটা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ুক এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
যেকোন বিচারেই কোন সংসদীয় এলাকায় জনমত একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনমতকে উপেক্ষা করে কিংবা তাদের মতামতের গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত আইন, সংবিধান, রেওয়াজ ও রীতির বিরুদ্ধ। আমরা নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সতর্ক হবার আহবান জানাই।
আশা করি তারা বিষয়টি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে বিবেচনা করবেন।