মোঃ খলিলুর রহমান খলিলঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জমি দলিল সংক্রান্ত উৎসে করের বেড়াজালে আটকে আছে জমি দলিল বা রেজিস্ট্রি। নবীনগর পৌরসভার সীমানার মধ্যে উৎসে করের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে জমি ক্রয় ও বিক্রয় হ্রাস পেয়েছে। এতে কমেছে নগদ টাকার লেনদেন বিপাকে পড়েছেন জমি রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত কর্মে জড়িত পেশাজীবিরা।
উৎসে কর বিধিমালা ২০২৪,সর্বশেষ ২৪জুন ২০২৫ তারিখে সংশোধিত হয়।সংশোধিত বিধিমালায় মূলত নবীনগর পৌর বাসীর গলারকাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে।নবীনগর পৌরসভার বাসিন্দা হওয়ায় যেন আজন্ম পাপ।নবীনগর পৌরসভায় সরকারি হিসেব মতে নাল জমির সর্বনিম্ন মূল্য ২৯০৮১ টাকা সে হিসেবে ত্রিশ শতক জায়গার মূল্য আট লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার টাকা।আট লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার টাকার জমি দলিল করতে খরচ হবে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। অথচ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গিয়েছে নবীনগর পৌর এলাকার আলমনগর বিলে নাল জমি কানি বা ত্রিশ শতকের মূল্য তিন লক্ষ টাকা অথচ উৎসে কর, চালান ও অন্যান্য খরচ সহ দলিল করতে খরচ হবে সাড়ে তিন লাখ টাকা।
তাছাড়া নবীনগর পৌর এলাকায় প্রতি শতকে, বাড়ির সর্বনিম্ন মূল্য তিন লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার,ভিটির সর্বনিম্ন মূল্য চৌদ্দ লক্ষ চৌত্রিশ হাজার,পুকুর সর্বনিম্ন মূল্য ৩৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে অথচ বাস্তবে পুরোপুরি উল্টো চিত্র।
অথচ পৌরসভার পার্শ্ববর্তী নবীনগর পূর্ব ও পশ্চিম ইউনিয়ন, শ্রীরামপুর, ইব্রাহিম পুর ইউনিয়ন ও শিবপুর ইউনিয়ন সহ প্রতিটি ইউনিয়নে শতকে নাল জমিতে উৎসে কর মাত্র পাঁচশ টাকা।নবীনগর পৌর সভার আলমনগরের সীমানার দুই কদম উত্তর দক্ষিণে আলমনগরে প্রতিশতকে উৎসে কর ১০ হাজার আর নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন হওয়ায় লাপাং এ আলমনগরের দুই কদম উত্তরে উৎসে কর শতকে মাত্র ৫০০ টাকা।এই বৈষম্যের কারণে জনগণের মাঝে চাপা খোপ বিরাজ করছে।
এই বিষয়ে সাবরেজিস্টার নবীনগর এস এ আবু মোছার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন উৎসে করের এই বিষয়টি আমাদের নিকটও ও মাত্রারিক্ত মনে হচ্ছে, এটি মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার কোন সুযোগ নেই।
তাছাড়াও নবীনগর সাবরেজিস্টার অফিসে বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়মের তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
পাওয়ার দলিল (হস্তান্তর দলিল) বিশেষ পাওয়ার অব অ্যাটর্নির দলিলে বা হস্তান্তরিত সম্পত্তির দলিলে লিখিত মোট মূল্যের ২%টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি সরকারি ভাবে নির্ধারিত থাকলেও নবীনগরে বেশির ভাগ সময় ৫% পর্যন্ত নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাছাড়া কমিশন দলিলে উপজেলা সীমানার মধ্যে হলে ৫০০০ হাজার টাকা পূর্বে খরচ হলেও এখন ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়।কমিশন দলিলে পূর্বে নবীনগর উপজেলার সীমানার বাহিরে ১৫ হাজার টাকা খরচ হলেও এখন ত্রিশ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।
অনেক সময় পাওয়ার দলিল থাকা অবস্থায় যাচাই বাঁচাই না করে পূনরায় দলিল করে জমি হস্তান্তর করার ও অভিযোগ রয়েছে।
এই সব অনিয়মের বিষয়ে সাবরেজিস্টার নবীনগর এস এ আবু মোছার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এই সব অনিয়মের বিষয়ে অবগত নই, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমি অব্যশয় ব্যবস্থা নিবো,নবীনগর বাসীর নিকট আমার বার্তা আপনারা জমি সংক্রান্ত কোন বিষয়ে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
নবীনগর পৌর এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন আগে বিলের এক কানি বা ত্রিশ শতক জায়গা দলিল করতে খরচ হতো সর্বোচ্চ সত্তর হাজার সেই একই পরিমান জমি গত দুই মাস আগে থেকে দলিল করতে খরচ হচ্ছে তিন লাখ ত্রিশ হাজার, সরকার আমাদের পকেট থেকে চুরি নই বরং ডাকাতি করছেন এটাই কি নতুন বাংলাদেশ, পৌর এলাকা হওয়াতে কি আমরা ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দা, আমরাতো পৌর সভার যাবতীয় কর পরিশোধ করে বসবাস করি তাহলে উৎসে করের নামে ডাকাতি কেন? এই উৎসে কর পূনরায় বিবেচনা করে প্রত্যাহার করা হোক।