রিয়াজুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এক নাম বেগম খালেদা জিয়া। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট ২০২৫) এই বরেণ্য নেত্রীর ৮০তম জন্মদিন। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট (অনেকে বলে ১৯৪৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর) জন্ম নেওয়া বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও দৃঢ়চেতা গণতন্ত্রের নেত্রী হিসেবে।
বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের শুরু স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার পর। ১৯৮১ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। সামরিক শাসনের কঠিন সময় থেকে শুরু করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন—সবক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন অগ্রণী ভূমিকার অধিকারী।
১৯৯১ সালে প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। এরপর ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেন এবং দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার শাসনামলে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিক্ষাখাতে সুযোগ সম্প্রসারণ এবং দারিদ্র্য হ্রাসে নানা উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একাধিকবার কারাবরণ করেছেন। অসুস্থতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মুখেও তিনি তার অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াননি। তার নেতৃত্বে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট বিভিন্ন সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করেছে।
রাজনীতির মাঠে যেমন তিনি দৃঢ়, তেমনি জনগণের কাছে সহজ-সরল জীবনযাপনের জন্যও জনপ্রিয়। শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই তার সমর্থক ও অনুরাগী রয়েছে। আজ তার জন্মদিনে দেশ-বিদেশে বিএনপির নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও মানবিক কর্মসূচি পালন করছেন।
দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তার দ্রুত সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক জীবন্ত ইতিহাস।
আজকের এই দিনে দলমত নির্বিশেষে অনেকেই স্মরণ করছেন তার অবদান, সংগ্রাম ও নেতৃত্বের কথা। তার দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে অব্যাহত অবদান রাখার জন্য সর্বস্তরের মানুষের প্রার্থনা অব্যাহত রয়েছে।