সাংবাদিক তুহিনের সন্তানদের পাশে মানবিক এসপি কাজী আখতার
প্রতিনিধি: পুলক শেখ
ভালুকা, ময়মনসিংহ
১১ আগস্ট ২০২৫ । সোমবার
ময়মনসিংহ: সন্ত্রাসীদের নির্মম হামলায় নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের দুই শিশু সন্তান তৌকির ও ফাহিমের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে এগিয়ে এসেছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম। তিনি কেবল একজন কর্মকর্তা হিসেবে নয়, একজন স্নেহময় অভিভাবকের ভূমিকায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন।
গত রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে ফুলবাড়িয়ার ভাটিপাড়ায় তুহিনের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এসপি কাজী আখতার শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি তাদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি পরিবারের সার্বিক কল্যাণে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, “এসপি স্যার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তুহিনের পরিবারের খোঁজ নিয়েছেন এবং তাদের সহায়তার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।”
তুহিনের স্ত্রী মুক্তা বেগম কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, “আমার ছোট্ট ফাহিম এখনো বলে, ‘মা, বাবা কখন আসবে?’ এই প্রশ্নে আমার বুক ফেটে যায়। আমি চাই আমার সন্তানেরা যেন বাবার শূন্যতা না বোঝে। এসপি স্যার আমাদের পাশে এসে একজন অভিভাবকের মতো আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।”
গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তুহিন একটি হানিট্র্যাপে আটক ব্যক্তির উপর হামলার দৃশ্য ক্যামেরায় ধরছিলেন। এই কারণে একটি সংঘবদ্ধ দল তাকে বর্বরোচিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনা দেশজুড়ে শোকের ঢেউ তুলেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নাজমুল হাসান জানান, সিসিটিভি ফুটেজের সহায়তায় ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭ জন গ্রেফতার হয়েছেন। মূল হোতা গোলাপি কারাগারে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।”
তুহিনের মৃত্যু সাংবাদিক সমাজের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তবে এই শোকের মধ্যেও এসপি কাজী আখতারের মানবিক উদ্যোগ আলোর রেখা এনে দিয়েছে। তুহিনের শিশু সন্তানদের কোমল মনে এই অভিভাবকের উপস্থিতি সান্ত্বনার ছোঁয়া দিচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ নাগরিকরা এসপি কাজী আখতারের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। অনেকে লিখেছেন, “তিনি কেবল একজন পুলিশ কর্মকর্তা নন, একজন সত্যিকারের মানুষ। তাঁর এই মানবিকতা দেশের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ুক।”