নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দের প্রতিবাদ
রফিকুল ইসলাম রনজু (কুড়িগ্রাম)
নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক গোলাম রসুল রাজাকে, সাবেক এমপি আলহাজ্ব সাইফু রহমান রানা কর্তৃক (মৌসুমী পাখি) বলায়, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মৌসুমী পাখি বলে আখ্যায়িত করে অপপ্রচার করার প্রতিবাদে, সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা ও পৌর বিএনপি নাগেশ্বরী।
৯ আগস্ট২০২৫ (শনিবার) সকাল ১১টায় নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির দলীয় অফিসে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান জেলা আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানাকে, জেলা বিএনপি’র কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক গোলাম রসূল রাজাকে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মৌসুমী পাখি বলার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন।
সংবাদ সম্মেলনে জোরালো প্রতিবাদের ভাষায়, নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক গোলাম রসূল রাজা বলেন, সাইফুর রহমান রানার এই মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক শিষ্টাচার, শালীনতা ও দলীয় শৃংখলার চরম লঙ্ঘন নয়, বরং এটি একজন আদর্শ, পরীক্ষিত ও মাঠের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নিবেদিত জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে ঈর্ষানিত হয়ে চরিত্র হননের অপচেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক গোলাম রসুল রাজা বলেন, আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই আমার রাজনীতি কোন মৌসুমী আবেগের ফল নয় বরং ছাত্র জীবন থেকে বিএনপির আদর্শ ও সংগ্রামের সঙ্গে সরাসরি জড়িত একটি সাধনার ফল। তিনি বলেন, আমার প্রয়াত বাবা জনাব মকবুল হোসেন ছিলেন বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির দীর্ঘদিনের সভাপতি। তার দেখানো পথ অনুসরণ, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি ১৯৮৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নকালে তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ও বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মাননীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল রিজভী আহমেদের হাতে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করি।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নকালে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শাহ মাখদুম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি পদ দায়িত্ব পালন করি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ভূমিকা পালন করি এবং ১৯৯০ সালের আন্দোলনে এলাকাতেও সক্রিয় নেতৃত্ব দেই।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আরও বলেন, আমি ১৯৯৯ সালে নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সহ- সভাপতি মনোনীত হই, ২০০৯ সালে নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে উপজেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হই। ২০১৫ সালে পুনরায় প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সভাপতি হয়ে দায়িত্ব পালন করি।
অধ্যাপক গোলাম রসুল রাজা বলেন দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জেলা বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে প্রতিটি আন্দোলন মিছিল সমাবেশ ও দলীয় কর্মসূচিতে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি বিগত বছরগুলোতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী লড়াই এবং এক তরফা দাবির আন্দোলনে আমি সাহসী ও সংগঠিত নেতৃত্ব দিয়েছি তারই ধারাবাহিকতায় গত ৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি আমাকে আহ্বায়ক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে আমার নেতৃত্বে গঠিত ৪১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জেলা বিএনপির অনুমোদন পায়, যা বর্তমানে সক্রিয় এবং কার্যকর কমিটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, জনাব সাইফুর রহমান রানার ‘মৌসুমী পাখি ‘ মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অপমানজনক এবং দলের ভেতরে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা। তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্হিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউল আলম শফি, সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান, বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান জিন্নু, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ওমর ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম সরকার, আশরাফ হোসেন আপেল, মোজাম্মেল হক দুদু, সদস্য আপেল সিদ্দিকি, মাইদুল ইসলাম, আশরাফুল আলমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শফিউল আলম শফি ও পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। নেতারা বলেন জনাব সাইফুর রহমান রানা উপজেলা বিএনপির অফিস নিয়ে যে জবাব দিয়েছেন তা মিথ্যায় ভরা। নেতারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক গোলাম রসুল রাজাকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় ‘ মৌসুমী পাখি’ বলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রেসক্লাব নাগেশ্বরীর সভাপতি শাহীন শহীদ ও সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রনজু সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীবৃন্দ।