বরিশালে ভরা মৌসুমেও মিলছেনা ইলিশ, বেড়েছে দাম চরমে।
মোঃ নুরে আলম,বরিশাল জেলা প্রতিনিধি।।
‘ইলিশের শহর খ্যাত’ বরিশালে ভরা মৌসুমও মিলছেনা কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ। সরবরাহ কম হওয়ায় বাজারে বেড়েছে দামও। এতে ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিম্নবিত্তসহ মধ্যবিত্তরাও।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে শহরের পাইকারি বাজার পোর্টরোড ঘুরে দেখা গেছে চোখে পড়ার মত আমদানি নেই ইলিশের। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। ফলে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। এতে মাছ কিনতে না পেরে হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ২ হাজার ১০০, আধা কেজি থেকে ৬০০ গ্রাম ইলিশের কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা এবং ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৩০০ টাকা।
এদিকে রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১ হাজার ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। আকারভেদে কিছু রূপচাঁদার দাম ৩ হাজার টাকাও ছুঁয়েছে। একইভাবে কোরাল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা কেজি দরে।
এছাড়া অন্যান্য মাছের দামও বাড়তির দিকে। বাজারে রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। নদীর বোয়াল মিলছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। চাষের কৈ ২২০, পাবদা ৩২০, লৈট্টা ১৫০, ঢেলা ৫০০, চেলা ২৮০, পাঙাশ ২১০, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চিংড়ির বাজারেও চড়া ভাব। ভেনামি চিংড়ি ৭০০, হরিণা চিংড়ি ৫৫০ এবং বাগদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে।
ক্রেতারা বলছেন, ইলিশের দাম এখন নিম্নবিত্ত দূরের কথা মধ্যবিত্তদেরও সাধ্যের বাইরে। এর প্রভাবে অন্যান্য মাছেরও দাম বেড়েছে। আমাদের পক্ষে এখন অন্য মাছ কিনে খাওয়াও সম্ভব হচ্ছেনা। পোল্ট্রি মুরগি ও ডিম ছাড়া আমরা খেতে পারছিনা।
ইলিশ কিনতে আসা আলামিন ফকির বলেন, ‘বাসায় মেহমান থাকার কারণে নলছিটি থেকে বরিশাল পোর্টরোডে ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। আকাশচুম্বী দাম দেখে কেনা সম্ভব হয়নি। আসলে এটা আমাদের সাধ্যের বাইরে। ইলিশ কিনতে আসলেও বাধ্য হয়ে অন্য মাছ কিনে বাড়িতে ফিরছি।’
বিক্রেতারা বলছেন, ‘ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। প্রচুর পরিমাণে জাটকা ধরায় পরিপূর্ণ সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের চেয়ে এবার ছোট মাছের ক্ষেত্রে কেজিতে ৫০০ টাকা বেশি। বড় মাছের ক্ষেত্রে কেজিতে ১ হাজারেরও বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।’
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক আলফাজ উদ্দিন শেখ বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ইলিশের উৎপাদনে সংকট দেখা দিতে পারে। নদীর যে চ্যানেল থেকে ইলিশ আসে, তাতে যদি নাব্যতা সংকট দেখা দেয়, তাহলে উৎপাদন কমে যেতে পারে। নদী দূষণের কারণে ইলিশের সংকট দেখা দিতে পারে। জাটকা অথবা ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ নিধনের কারণে সংকট দেখা দিতে পারে। তাছাড়া পরিবহন খরচ বেশি কিংবা অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি থাকতে পারে। দাম বাড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।’