নিয়ামতপুরে রাতে ধান চুরির চেষ্টা –
এম,এ,মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার,নিয়ামতপুর (নওগাঁ)
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ঘোলকুড়ী গ্রামে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা ঘটেছে যা পুরো এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মোঃ আব্দুল জলিলের দুই ছেলে মোঃ জয়নাল (৪০) ও মোঃ বকুল (৩৫)-এর দ্বারা, যারা একই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী মোঃ খাইরুল ইসলামের বক্তব্য অনুযায়ী, গত রাতে তিনি হঠাৎ শব্দ পেয়ে নিজের বাড়ির আঙিনায় গিয়ে দেখতে পান যে দুজন ব্যক্তি তার ঘরের পাশের ধান রাখার জায়গা থেকে বস্তাভর্তি ধান নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনা আঁচ করতে পেরে তিনি চোরদের দিকে এগিয়ে যান। তখনই তারা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পালানোর সময় চোরেরা বাড়ির ভেতরের পানির ট্যাপটি ভেঙে দেয়, যেন পানি পড়ে মালিক ও পরিবারের মনোযোগ সেদিকে সরে যায় এবং তাদের পালানো সহজ হয়।পরদিন সকালে মোঃ খাইরুল ইসলাম ও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা সন্দেহভাজন হিসেবে আব্দুল জলিলের দুই ছেলে জয়নাল ও বকুলকে ডাকেন। এসময় মোঃ জয়নাল সাড়া দিয়ে “আসছি” বললেও সে দ্রুত পালিয়ে যায় এবং আর ফিরে আসেনি।অপরদিকে মোঃ বকুল উপস্থিত গ্রামবাসীর সামনে নিজ মুখে স্বীকার করেন, “আমরা দুই ভাই মিলে খাইরুল ইসলামের বাড়িতে ধান চুরি করতে গিয়েছিলাম। মালিক দেখে ফেলায় ভয় পেয়ে আমরা পালিয়ে আসি।” তার এই স্বীকারোক্তিতে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে যান। একদিকে একজন পালিয়ে বেড়াচ্ছে, অন্যদিকে অপরজন নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে।এই ঘটনা ঘোলকুড়ী গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর অনেকে বিষয়টিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন। তারা মনে করেন, এই ধরনের অপরাধ বরদাস্ত করলে ভবিষ্যতে আরও দুঃসাহসী চুরি ও অপকর্মের ঘটনা ঘটতে পারে।এই দুইজনের বিরুদ্ধে চুরির ঘটনা একাধিক বার আছে।এমনকি নিজের শাশুড়ির গরু চুরি করে নেওয়ার পর জনতার হাতে ধরা পড়ে।গ্রামের একজন প্রবীণ মুরব্বি বলেন, “এভাবে নিজের গ্রামেরই ছেলেরা যদি অন্যের ধান চুরি করে, তাহলে সমাজে শান্তি কোথায় থাকবে? চোর যেই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।”এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তবে স্থানীয়দের মতে, বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করা হবে এবং যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকে জানিয়েছেন, গ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।চুরি একটি ঘৃণ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর যখন সেই অপরাধ নিজের গ্রামের ভেতরেই ঘটে, তখন তা আরও লজ্জাজনক ও দুঃখজনক হয়ে ওঠে। ঘোলকুড়ী গ্রামের এই ঘটনাটি সমাজের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। এ ধরনের অপরাধ যেন আর না ঘটে, তার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি সচেতন নাগরিককেও এগিয়ে আসতে হবে।