নান্দাইলে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বসলো অবৈধ পশুর হাট
মোঃ এমদাদুল হক ভূইয়া
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বারুইগ্রাম চৌরাস্তা এলাকায় আবারো বসেছে অবৈধ পশুর হাট। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) যথারীতি জমজমাটভাবে হাটটি বসানো হয়, যা আদালতের স্পষ্ট আদেশ লঙ্ঘনের শামিল।
গত ২১ জুলাই বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই হাটের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দেন। একইসঙ্গে এ হাট বাতিল না করার কারণ জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর প্রতি রুল জারি করেন।
তবে এ আদেশের তোয়াক্কা না করেই তিন দিন পর বৃহস্পতিবার আগের মতোই গরু-ছাগলের জমজমাট হাট বসে বারুইগ্রাম চৌরাস্তা এলাকায়। হাটে বেচাকেনাও হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই।
রিটকারী ও চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. আল আমিন খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি নিজে গিয়ে দেখেছি, আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে হাট চলছে। প্রশাসনের এই নির্লিপ্ততা আদালতের মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা এই হাটটি সরকারি কোনো তালিকাভুক্ত নয়। কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় এ হাট পরিচালিত হয়ে আসছে। ফলে এখান থেকে আদায় করা লাখ লাখ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা না পড়ে ব্যক্তি মালিকানায় চলে যাচ্ছে।
জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জলাভূমি ভরাট করে গড়ে তোলা হয় হাটটি। পূর্বে বৈধভাবে পরিচালিত চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বাঁশহাটি হাট এই হাটের কারণে কার্যত বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইলের ইউএনও সারমিনা সাত্তার বলেন, “উচ্চ আদালতের কোনো আদেশ এখনো হাতে পাইনি। পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফয়জুর রহমান মন্তব্য করেন, “বারুইগ্রাম চৌরাস্তা বাজারটি আমার দায়িত্বভুক্ত এলাকার মধ্যে পড়ে না, তাই কিছু বলতে পারছি না।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতি এবং রাজনৈতিক মদতেই এই অবৈধ হাট চলতে থাকায়, আদালতের আদেশও কার্যত অর্থহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে।