সুনামগঞ্জ-৩ নির্বাচনী মাঠে নজর কাড়ছেন মেজর(অবঃ) আশফাক শামী
দিলীপ কুমার দাশ
স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জ
আগামী সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ ৩ (জগন্নাথপুর—শান্তিগঞ্জ) আসনে এমপি পদে নির্বাচনী লড়াই করতে চান মেজর(অবঃ) আশফাক শামী। জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী মেজর(অবঃ) আশফাক শামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে আদর্শ মনে করেন। তিনি বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেলে নিজের বিজয় নিশ্চিতের লক্ষ্যে দলীয় নেতাকমী সহ সর্বস্তরের ভোটার ও শুভাকাঙ্খিদের সাথে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন নির্বাচনী মাঠে।
মেজর(অবঃ)আশফাক শামী মনে করেন পরিবর্তনের শুরু হবে আপনাকে দিয়ে, রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরে ন্যায়, সমতা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। সমাজে বৈষম্য দুর হবে, ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে। তিনি এমপি নির্বাচিত হলে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলাবাসীর কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করবেন। অত্র অঞ্চলে বেকারত্ব দূরীকরণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে চান তিনি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পুরো দায়িত্ব ক্ষমতা নিয়ে যেন কাজ করতে পারেন সেই সুযোগ টা সৃষ্টি করে দিতে চান তিনি। স্থানীয় পর্যায়ে সাংসদ সদস্যদের ক্ষমতা চর্চা কিভাবে কমিয়ে আনা যায় তার অন্যতম লক্ষ্য।
জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর- শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের কৃতী সন্তান মেজর (অবঃ) আশফাক শামী। তিনি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবঃ) সৈয়দ আলী আহমদের পুত্র। তার মায়ের নাম সৈয়দা আমিরুন আহমদ। বড় ভাই ব্যারিস্টার আফজাল জামী যুক্তরাজ্য কর্মরত। দুই ছোটবোনের মধ্যে আফসানা মুন এক্সিকিউটিভ হিসেবে সিলেটের কুইন্স হসপিটালে কর্মরত, ডা. সমুস্তা ফারজানা, চিকিৎসক হিসেবে যুক্তরাজ্যে কর্মরত রয়েছেন। মেজর(অবঃ) আশফাক শামী তার বাবার চাকুরীর সুবাদে দেশের খ্যাতনামা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন। তিনি যশোর দাউদ পাবলিক হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে প্রাইমারী শেষ করেন, পরে চট্টগ্রামের বাইতুশ শরফ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। চট্টগ্রাম ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে খণ্ড কালীন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪০ তম দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে ব্যাচেলর অব আর্টস ও মিলিটারি সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।
পেশাগত জীবনে একাধিক প্রশিক্ষণ যেমন ডিজিটাল ফরেনসিক লিডএক্সামিনার- Koeing (যুক্তরাষ্ট্র), ওকুপেশনাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি ম্যানেজমেন্ট (IOSH) যুক্তরাজ্য, ক্রাউড বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট কোর্স যুক্তরাজ্য, সাইকোলজিক্যাল অপারেশনস বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র, কমান্ডো কোর্স-বাংলাদেশ সেনাবহিনী, জুনিয়র কমান্ড ও স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন।
২৪ বছরের পেশাগত কর্মজীবনে মেজর(অবঃ) আশফাক শামী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাঠ পর্যায় থেকে উচ্চপর্যায় পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে চট্টগ্রামের পার্বত্য জেলায় ৫ বছর সক্রিয় অপারেশনাল দায়িত্ব পালন করেন, ২০০৮ সালে মিয়ানমার সংকটকালে রামুতে মোতায়েন বাংলাদেশ কমান্ডোর প্রথম দলের দায়িত্ব পালন, বাংলাদেশে একাধিক বেসামরিক প্রশাসন সহায়তা কার্যক্রমের পাশাপাশি, কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কিউআরএফ কমান্ডার হিসেবে কাজ করার পর ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের সময় কমান্ডো কোম্পানি কমান্ডার হিসাবে নিরাপত্তা ও তদন্ত কাজের প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়োজিত ছিলেন, এছাড়া র্যাবে দায়িত্ব পালনকালে সততার সাথে কাজ করেন তিনি।২০১২ সালের এপ্রিল মাসে স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী, মেজর(অবঃ) আশফাক শামী—দুঃখি মেহনতি মানুষের বন্ধু হয়ে জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান। শৃঙ্খলাবদ্ধ ও নীতিনিষ্ঠ একজন মানুষ মেজর(অবঃ) আশফাক শামী, যিনি ন্যায়, সমতা এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।
তিনি মনে করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব, কৌশলগত প্রশাসন এবং দায়িত্ববোধ এবং কর্ম জীবনে একজন কঠোর কিন্তু মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে যে দক্ষতা অর্জন করেছেন, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। মেজর(অবঃ) আশফাক শামী রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এমনি এক শাসনব্যবস্থায় বিশ্বাস করেন যা হবে স্বচ্ছ, ন্যায়ভিত্তিক এবং জনগণকেন্দ্রিক যেখানে নীতিনির্ধারণ মানুষকে ক্ষমতায়ন ও উন্নীত করতে সহায়ক হয়।
২০১৩ সালে মেজর(অবঃ) আশফাক শামী বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের এক কমিটির নিকট সাক্ষ্য প্রদান করেন। এজন্য বিগত সরকারের আমলে তাদের রোষানলে পড়ে দীর্ঘ ১৩ বছর বাংলাদেশে আসতে পারেন নি তিনি। এছাড়া বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লব চলাকালে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন চিহ্নিত করতে সহায়তা করেন তিনি। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে ফিলিস্তিনকে মানবিক সহায়তাকরী বিভিন্ন সংঘটনের সামাজিক ও আর্থিক কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত কাজ করেছেন মেজর(অবঃ) আশফাক শামী।
মেজর(অবঃ) আশফাক শামী সাংবাদিকদের জানান, তিনি বিশ্বাস করেন জনাব তারেক রহমানের আগামী বাংলাদেশ হবে সত্যিকারের গনতন্ত্রের দেশ। দেশ গঠনের এই যাত্রায় শরিক হওয়ার সুযোগ পেলে তার বক্তব্যে বলেন,
“আমি যদি সুনামগঞ্জ ৩ আসনে এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে, জনপ্রত্যাশা পূরণে আন্তরিকভাবে কাজ করবো। মানব সম্পদের উন্নয়ন আমার প্রধান লক্ষ্য। কাউকে হামলা ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে হয়রানী হতে হবে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা—ঘাট সহ কাঙ্খিত উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা রাখবো। বৈদেশিক আয়ের পাশাপাশি নিজ এলাকায় উৎপাদনমুখী কার্যক্রম করতে চাই।
মেজর (অবঃ) আশফাক শামীর নির্বাচনী প্রচারনায় এলাকায় ইতিমধ্যে খুব সাড়া পড়েছে। নির্বাচনের মাঠে ভোটারদের নজর কাড়তে পেরেছেন তিনি। জগন্নাথপুর – শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি—পেশার লোকজন বলেন, আমাদের এলাকার জন্য মেজর((অবঃ) আশফাক শামীর মতো যোগ্য লোক দরকার। এমন যোগ্যতা সম্পন্ন লোক এমপি হলে এলাকার জন্য খুব ভালো।