এম,এ,মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার,নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি,দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
বাংলাদেশের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অনেক ত্যাগ ও রক্তদানের ঘটনা বিদ্যমান। এরই একটি অন্যতম করুণ অধ্যায় হলো ১৬ জুলাই, যা এখন থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে “জুলাই শহীদ দিবস” হিসেবে শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হবে। সরকার সদ্য গৃহীত এক সিদ্ধান্তে ১৬ জুলাইকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর ফলে এ দিনটি এখন থেকে জাতীয়ভাবে পালন করা হবে, যদিও এটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গণ্য হবে না।এই দিবসটির প্রেক্ষাপট গড়ে উঠেছে ২০০৬ সালের সেই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, যখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলন চলছিল। ঠিক সে সময়েই ১৬ জুলাইয়ের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান একাধিক রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ। আন্দোলনরত জনতা গণতন্ত্র রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছিল। তাঁদের এই আত্মত্যাগ ও সংগ্রামকে স্মরণীয় করে রাখতে “জুলাই শহীদ দিবস” রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ করলো।সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, দিবসটি জাতীয় শোক ও শ্রদ্ধার দিন হিসেবে পালিত হবে। সরকারি দপ্তরে কালো ব্যাজ ধারণ, আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাণী প্রদান করার সম্ভাবনা রয়েছে।এই দিবস পালনের মাধ্যমে শুধু শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোই নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানুষের অধিকার রক্ষার বিষয়ে সচেতন করাই এর মূল লক্ষ্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই উপলক্ষে আলোচনা সভা ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে, যাতে ছাত্রছাত্রীরা এই ইতিহাস সম্পর্কে জানে ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।প্রসঙ্গত, একইসঙ্গে সরকার ৫ আগস্টকে “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস” হিসেবে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করে ঘোষণা দিয়েছে, যার ফলে এ দিনে সরকারি ছুটি থাকবে। অন্যদিকে পূর্বঘোষিত “৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস” বাতিল করা হয়েছে।“জুলাই শহীদ দিবস” রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পাওয়ায় একটি গৌরবময় অধ্যায় নতুন করে সামনে এলো। এটি শুধুমাত্র একটি শোকের দিন নয়, বরং এটি একটি অনুপ্রেরণার দিন—যে দিন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, গণতন্ত্রের জন্য কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। এই দিনটির যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করে পালনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো ও গণতান্ত্রিক চেতনা শক্তিশালী করাই আমাদের সকলের দায়িত্ব।