জামালপুরের মান্দারগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসপাতালে বেহাল দশা নির্বাচনী পোস্টারে ঢেকেছে সেবার পরিবেশ
মোঃ আনোয়ার হোসাইন বিশেষ প্রতিনিধি, জামালপুর।
জামালপুর জেলার মান্দারগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালটি যেন নির্বাচনী পোস্টারের যাদুঘরে পরিণত হয়েছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে থেকে এখনও অপসারণ করা হয়নি বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার। এতে একদিকে যেমন হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে, অন্যদিকে সেবাদানকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
হাসপাতালের নার্স ডিউটি রুমসহ বিভিন্ন কক্ষের দেয়ালে, দরজায় এবং করিডোরে এখনো অসংখ্য নির্বাচনী পোস্টার চোখে পড়ছে। এমনকি কিছু পোস্টার ছিঁড়ে বা ঝুলে গিয়ে আরও দৃষ্টিকটু অবস্থা তৈরি করেছে। এসব পোস্টারের ধুলোবালি হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ পরিবেশকে নোংরা করছে, যা রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। একটি হাসপাতাল যেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যবিধি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়া উচিত, সেখানে এমন পরিবেশ অত্যন্ত হতাশাজনক।
সাধারণত, নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পরই সকল নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী অপসারণের নির্দেশনা থাকে। কিন্তু মান্দারগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা এবং হাসপাতালে আসা রোগীরা এই অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একটি সরকারি হাসপাতালে এমন অব্যবস্থাপনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন নির্বাচন শেষ হওয়ার এত দিনেও এই পোস্টারগুলো অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এমন অবহেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকেই ইঙ্গিত করে।
হাসপাতালের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “নির্বাচনের সময় সবাই পোস্টার লাগিয়ে চলে গেছে। আমরা বারবার বললেও কেউ সরাতে আসেনি। কর্তৃপক্ষও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।”
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং মান্দারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের দাবি, হাসপাতাল থেকে অবিলম্বে সকল নির্বাচনী পোস্টার অপসারণ করে একটি স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক, যাতে রোগীরা নির্বিঘ্নে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে যেন কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রচার সামগ্রী লাগিয়ে পরিবেশ নষ্ট করা না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।