ভালুকায় ৮ বছরের শিশুর রহস্যজনক মৃ*ত্যু: আত্ম*হ*ত্যার সন্দেহ!
নিজস্ব প্রতিবেদক | পুলক শেখ
ভালুকা, ময়মনসিংহ | ৩ জুলাই, ২০২৫
ভালুকায় ৮ বছর বয়সী শিশুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার: অপমৃত্যু মামলা দায়ের, তদন্ত শুরু
ভালুকা, ময়মনসিংহ – ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের লবণকোটা এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ৮ বছর বয়সী মোঃ মোশারফ হোসেন নামের এক শিশুর ঝুলন্ত মরদেহ তার পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করেছেন। প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও, ঘটনার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, নিহত শিশু মোশারফ হোসেন গাইবান্ধা জেলার মাস্টারপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নুরুজ্জামান ও মোছাঃ মুসিনা বেগম দম্পতির সন্তান। জীবিকার সন্ধানে পরিবারটি ভালুকার লবণকোটা এলাকায় রিয়াজ নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিল।
পরিবারের সদস্যরা জানান, আজ সকালে (জুলাই ৩, ২০২৫) ঘরের ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে তারা দরজা খোলার চেষ্টা করেন। দরজা খোলার পর তারা দেখতে পান যে, মোশারফ একটি উড়না দিয়ে ঘরের ধরনার সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।
মোশারফ হোসেনের বাবা মোঃ নুরুজ্জামান চিৎকার দিয়ে দ্রুত দরজা খুলে দেন। ছেলেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টায় তিনি তাকে নামানোর চেষ্টা করলে ওড়নার বাঁধন খুলে মোশারফ মাটিতে পড়ে যায়। বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশা নিয়ে দ্রুত তাকে হবিরবাড়ী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণের পরামর্শ দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মোশারফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন, যা পরিবারের জন্য ছিল এক অপূরণীয় ক্ষতি।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। শিশুর মৃত্যুর পেছনে কোনো পারিবারিক বা মানসিক কারণ ছিল কি না, তা আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি।" তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে, যা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সহায়ক হবে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মোশারফের আচরণে এমন কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি যা থেকে আত্মহত্যার ইঙ্গিত পাওয়া যেত। তারা হতবাক হয়ে পড়েছেন এমন একটি ঘটনার আকস্মিকতায়।
এদিকে, পুলিশ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে নিবিড়ভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। পারিবারিক জীবনে কোনো সমস্যার কারণে শিশুটি মানসিক চাপের মুখোমুখি হয়েছিল কি না, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।