ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এখন ভালুকার থানার ওসি
স্টাফ রিপোর্টার
আদিলুর রহমান গফরগাঁও ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ প্রশাসনে ওসি পদে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার পদায়ন ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে, দায়িত্ব পালন করছেন মো. হুমায়ুন কবীর, যিনি একসময় এমসি কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভালুকা থানার ওসি মোঃ হুমায়ুন কবীর ২০০২ সালে সিলেটের লালাবাজার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ২০০৪-২০০৫ সালে দক্ষিণ সুরমা থানা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বিতর্কিত আজাদ গ্রুপের অনুসারী এবং তার বাবা ছিলেন সাবেক পুলিশ পরিদর্শক ও ইউপি আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ছিলেন।
এসব তথ্য পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা’র পরিচিতি যাচাই রিপোর্টে উল্লেখ থাকলেও,। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং তার নামে কেউ হয়তো ভুল তথ্য দিয়েছে। ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আখতার উল আলম জানান, যাচাই দেখা হচ্ছে । তবে নতুন কোনো তথ্য প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি পদায়ন কে ঘিরে প্রশাসনে রাজনৈতিক প্রভাবের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আইজিপি বরাবরে একটি অভিযোগ জমা হয়।
সেখানে দেখা যায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আমিনুল হক শামীম প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে আনতে অর্থের বিনিময়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন। এমনকি একাধিক থানার ওসি যারা আওয়ামী নেতাদের গ্রেপ্তার অভিযানে সক্রিয় ছিলেন, তাদের একযোগে বদলি করা হয়। বদলির পর সেইসব থানাগুলো থেকে আওয়ামী নেতাদের গ্রেপ্তার কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। বদলির পেছনেও আমিনুল হক শামীমের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, অতীতের বিতর্কিত আরেক ওসি মিজানুর রহমান, যিনি নোয়াখালীর সেনবাগ থানায় জামাত-বিএনপির নেতাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে এজাহারভুক্ত আসামী ছিলেন, তাকেও ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়।
গোপন তথ্য অনুযায়ী, সাংবাদিকদের অনুসন্ধান কাজ বাধাগ্রস্ত করতে স্থানীয় দুই সাংবাদিককে সাজানো মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টাও চলে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক ভুক্তভোগী সাংবাদিক পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। অন্যদিকে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ময়মনসিংহে কোনো বড় সহিংসতার ঘটনা না ঘটলেও রাজনৈতিক পক্ষপাতের কারণে পুলিশ কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে, যাদের অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। এভাবে বিতর্কিত এবং রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের পুলিশ প্রশাসনে বসিয়ে রাখলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে এবং জনগণের আস্থা আরও কমে যাবে।