মোঃ হেলাল উদ্দিন উপজেলা প্রতিনিধি নালিতাবাড়ী
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নিয়মিত অনিয়ম, দেরিতে অফিসে যোগদান, ঘুষ গ্রহণ ও বহিষ্কৃত কর্মচারীর অবাধ বিচরণের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা শারমীন আক্তার এবং পূর্বে বরখাস্ত হওয়া নকল নবীশ জাহাঙ্গীর আলম জনি।
সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী নাগরিক বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সাব-কবলা দলিলের নির্ধারিত ফি ৩৬০ টাকা ও হেবা ঘোষণা দলিলের জন্য ৮০০ টাকা হলেও, জাহাঙ্গীর আলম জনি যথাক্রমে ২৩০০ টাকা ও ২৯০০ টাকা আদায় করছেন। এছাড়াও, ‘খ’ তফসিলভুক্ত জমির রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি অসদাচরণ, দলিল নকল সংক্রান্ত কাজে অবহেলা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের দায়ে জনিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে, ওই বছরের ২৩ মার্চ তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে অফিসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
কিন্তু বাস্তবচিত্র ভিন্ন। সরেজমিনে গত রোববার দুপুরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুপস্থিত, ফলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এই সময়ে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলম জনিকে অফিসের ভেতরে বসে ধূমপান করতে দেখা যায়।
অফিসের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “স্যার প্রায়ই ১১টার পর অফিসে আসেন। আর জনি ভাই বহিষ্কৃত হলেও এখনো অফিসের বেশিরভাগ কাজ তিনিই পরিচালনা করেন।”
সেবা নিতে আসা এক ভুক্তভোগী লোকমান হোসেন জানান, “আমি সকাল ১০টা থেকে বসে আছি, কিন্তু এখনো অফিসের কাজ শুরু হয়নি। ঘুষ না দিলে এখানে কোনো কাজ হয় না।”
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে জনি দাবি করেন, “আমাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল, পরে ব্যাখ্যা দেওয়ার পর আমি পুনরায় অফিসে যোগ দিই। স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের কোনো নির্দেশ নেই।”
অন্যদিকে, দুপুর ১২:৩০ মিনিটে অফিসে এসে সাব-রেজিস্ট্রার শারমীন আক্তার সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এবং ফোন রিসিভও করেননি।
জেলা রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান বলেন, “আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”