আজাদুল ইসলাম, প্রভাতী বাংলাদেশ
নাটোরের বড়াইগ্রামে আবারও কেঁপে উঠল জনমানস। জুই হত্যার দগদগে স্মৃতি এখনো শুকায়নি, এরই মধ্যে মসলার ফ্যাক্টরির ভেতরে ভুট্টার গাছের নিচে পাওয়া গেল আট বছরের শিশু মিনহাজ হোসেন আবিরের নিথর দেহ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় শিশু আবির। সে ফিরল না। সন্ধ্যার আগেই উৎকণ্ঠায় কাঁপতে থাকে তার পরিবার। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সন্ধ্যায় তার বাবা মিলন হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরপর এলাকাবাসী ও স্বজনেরা ছুটে যান আশেপাশের সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে। হঠাৎ মহিষভাঙ্গা এলাকার বনলতা মসলা ফ্যাক্টরির ভেতরে, একটি জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায় আবিরের রক্তমাখা সাইকেল ও একজোড়া জুতা। দৃশ্যটি দেখে আঁচ করা যায়—কিছু একটা ভয়ঙ্কর ঘটেছে।
সঙ্গে সঙ্গে তল্লাশি চালানো হয় ফ্যাক্টরির ভেতরের ঝোপঝাড় ও ভুট্টা ক্ষেতে। অবশেষে সন্ধ্যার পরেই একটি ভুট্টার গাছের নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় শিশু আবিরের মরদেহ। সেই মুহূর্তে কান্নায় ভেঙে পড়ে উপস্থিত সবাই। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
নিহত আবির মহিষভাঙ্গা গ্রামের মিলন হোসেনের একমাত্র ছেলে এবং আবিদ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার জানান প্রাথমিকভাবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। শিশুটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যাকারীরা সম্ভবত ঘটনাস্থলের আশপাশেই পরিচিত কেউ। আমরা তদন্তে অগ্রগতি করছি এবং খুব দ্রুতই জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ ঘটনায় পুরো মহিষভাঙ্গা এলাকাজুড়ে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। জুই হত্যার দুঃসহ স্মৃতি এখনো মানুষ ভুলে উঠতে পারেনি—তার মধ্যেই আবারও নিষ্পাপ এক শিশুর এমন নির্মম পরিণতি।
শিশুটির মা আহাজারি করে বলছিলেন “আমার ছেলে তো খেলতে গেছিল, তাও দুপুরে, কেউ কীভাবে এমন করতে পারে! আমার আবির আর ফিরবে না…!
একজন প্রতিবেশী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন এই সমাজে কি এখন শিশুরাও নিরাপদ না? আমরা দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। বারবার কেন আমাদের বুক খালি হবে?