কামাল উদ্দিন: স্টাফ রিপোর্টার
করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে গণসচেতনতা—এমন মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, গণসচেতনতা ছাড়া করোনা মোকাবিলা সম্ভব নয়। আমরা যদি আগের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, তাহলে ইনশাআল্লাহ এবারও সফল হতে পারব।
তিনি বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে হাজারী লেইনে বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক সচেতনতামূলক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী (মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার) এবং সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।
মেয়র বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টটি অনেক বেশি সংক্রামক। তাই এই মুহূর্তে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসম্পৃক্ততা জরুরি। আমরা চাই, এই শহর হোক ক্লিন সিটি, গ্রীন সিটি, হেলদি সিটি এবং সেফ সিটি। এটি কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। এই শহর আমাদের সবার, তাই আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই আমরা এটি গড়ে তুলব।
তিনি আরও বলেন, আমি ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল এবং ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করেছি। সেখানে করোনা রোগীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিয়েছি। চসিকের পক্ষ থেকে আমরা একটি নতুন আইসোলেশন সেন্টার চালু করতে যাচ্ছি, যা আগামীকাল উদ্বোধন করা হবে।
ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধ নিয়েও মেয়র গুরুত্বারোপ করে বলেন, বর্ষার স্বচ্ছ জমে থাকা পানিই এডিস মশার প্রজননের উপযুক্ত ক্ষেত্র। একটি ডাবের খোসা, একটি প্লাস্টিক বোতল বা একটি পলিথিনে এক মিলিলিটার পানিও যদি জমে থাকে, তা থেকে মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে। তাই নগরবাসীকে অনুরোধ করছি—প্লাস্টিক, পলিথিন বা যে কোনো ধরনের আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। এটি শুধু মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হবে না, বরং জলাবদ্ধতা রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম একটি সাম্যের শহর, একটি সম্প্রীতির শহর। আমরা ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে এই শহরের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় কাজ করতে চাই। এই ঐক্য, এই সংহতি আমাদের মূল শক্তি। আসুন, সবাই মিলে সচেতন হই, অন্যদের সচেতন করি এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদে থাকি।
চট্টগ্রাম কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা উচিত। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এমন উদ্যোগ নিলে গণসচেতনতা আরও বিস্তৃত হবে।
তিনি বলেন, এই শহর আমাদের সবার। এটি সাম্যের শহর, সম্প্রীতির শহর। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে এই শহরের উন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে।
এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হারুন জামান, আহবায়ক কমিটির সদস্য গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, খোরশেদুল আলম, বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সভাপতি মো. নুরুল গণি, সিনিয়র সহ-সভাপতি মহসিন উদ্দিন, সহ-সভাপতি মো. আজগর আলী, সুরেশ বড়ূয়া, দিলিপ কুমার সুশীল, বিএনপি নেতা আলমগীর নুর, সৈয়দ আবুল বশর, কলিম উদ্দিন, প্রসান্ত কুমার পান্ডে, আবুল কালাম প্রমূখ।