বাল্যবিবাহের প্রবণতা বাড়ছে ফুলবাড়িয়ায়
মোঃ মাহাবুল আলম। উপজেলা প্রতিনিধি, ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
ময়মনসিংহ জেলার, ফুলবাড়িয়া থানায় বাল্যবিবাহের যেনো প্রতিযোগিতা চলছে। অষ্টম শ্রেণী থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিবাহের প্রবণতা বাড়ছে ব্যাপক হারে।উল্লেখ্য যে, কখনো ছেলে মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করছে। আবার কখনো মেয়ে চলে আসছে ছেলের বাড়িতে। আবার কখনো ছেলের বাড়ি থেকে লোকজন গিয়ে মেয়েকে নিয়ে এসে রাতের আঁধারে বরের বাড়িতে বিয়ে পড়াচ্ছে।জন্ম সনদ অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় অনেকের বিয়ে হচ্ছে রেজিস্টেশন ছাড়াই।ফলে বিয়ের কয়েক মাস পরেই দেখা দিচ্ছে দাম্পত্য কলহ। সেই সাথে অনেকের বিচ্ছেদের মাধ্যমে সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটছে।বিয়ের ব্যাপারে সরকারের নির্ধারিত বয়সের সীমাবদ্ধতা (ছেলে ২১ বছর এবং মেয়ে ১৮ বছর) থাকলেও অনেকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আবেগ প্রবন হয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে।গত ছয় মাসে ভবানীপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে বাল্য বিবাহ হয়েছে প্রায় দশটি। নকল জন্ম সনদ দিয়ে অধিক অর্থের লোভ দেখিয়ে, কাজীর মাধ্যমে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করে নিচ্ছেন অনেকে।আর্থিক স্বচ্ছলতা ছাড়াই বেকার ছেলেরা আবেগে বশীভূত হয়ে বিয়ে করেছেন অনেকে। অনেক ক্ষেত্রে পিতা-মাতাও বিবাহ করাতে বাধ্য হচ্ছেন।সমসাময়িক পরিস্থিতিতে সংসারের খরচ মিটিয়ে এ সকল দাম্পত্য জীবন কত দীর্ঘস্থায়ী হবে তার বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া যাবে সময় গড়ালেই। বাল্য বিবাহের কঠিন পরিণতি ভোগ করছে নারী সমাজ। অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় বাচ্চা ধারণ করে প্রসবকালীন জটিলতায় ভুগছে অনেকে। বর্তমানে অধিকাংশ নারীদের বাচ্চা হচ্ছে সিজারের মাধ্যম্যে।ফলে নারীদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে চরম ভাবে। বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সরকারের নানাবিদ সচেতনতা মূলক কর্মসূচি থাকলেও সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না কেউ । অপরিপক্ষ সন্তান জন্ম দিয়ে বাচ্চা এবং বাচ্চার মা উভয়েই নানাবিদ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সময় মত জনসাধারণকে বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করা না গেলে আগামী প্রজন্ম ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হবে । তাই অতি দ্রুত জনসাধারণকে সচেতন করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সেই সাথে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে বয়স সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করার জন্য বিয়ের রেজিস্ট্রেশন কারী কাজিদের সচেতন করতে হবে। যাতে করে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দাম্পত্য জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়এবং আগামী প্রজন্ম সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ে তুলে।