1. news@www.provatibangladesh.com : বাংলাদেশ : দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
  2. info@www.provatibangladesh.com : দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ :
বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
আল্লামা সাঈদীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী: স্মৃতিতে অম্লান মুফাসসিরে কোরআন ভোলা জেলার ডিবি পুলিশের অভিযানেঃ- ১০০ (একশত) পিচ অবৈধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ০২ জন আটক সবার জন্য প্রত্যাশা সামাজিক সংগঠনের ত্রাণ বিতরণ ও আলোচনা সভা উলিপুরে দুর্যোগ-দুর্ভোগে অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল আব্দুস সোবহান। সাতক্ষীরার তালায় ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক ৭ ফার্মেসীতে ১৬ হাজার টাকা জ,রি,মা,না। হরিপুরে গলায় ফাঁ,স দিয়ে এক ব্যক্তি আ,ত্ম,হত্য চট্টগ্রাম সিটি রেড ক্রিসেন্টের উদ্যোগে জুলাই আন্দোলন ও ফেনী বন্যায় মানবসেবী স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মাননা প্রদান কালকিনিতে মানবপাচার মা,মলা,সহ ১০টি মা,ম,লার আ,সা,মী গ্রে,ফ,তার ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে যুদ্ধের উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি রাকসু নির্বাচন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক মতবিনিময় সভা

সাতক্ষীরার প্রতিটি ইউনিয়নে আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ।

দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

 

আনারুজ্জামান বিশেষ প্রতিনিধি।

সাতক্ষীরায় জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জেলার ৭৮টি ইউনিয়নে একটি করে আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাদক ও অনলাইন গেমিংয়ে আসক্তি এবং এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান সভায় আলোচনা হয়েছে। সোমবার (১৬ জুন) সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাসের সঞ্চালনায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মো মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাম্প কমান্ডার মেজর ইফতেখার আহমেদ, ব্যাটালিয়ন ৩৩ বিজিবি’র উপ-অধিনায়ক ক্যাপ্টেন শাদমান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাসরুবা ফেরদৌস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মোশাররাফ হোসেন মশুসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের নেতারা। আমরা আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
বাংলাদেশ একটি গ্রামীণ প্রধান দেশ। দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। গ্রাম হলো আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সভ্যতার মূল শিকড়। তবে দুঃখজনকভাবে দেশের অধিকাংশ গ্রাম এখনও দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অবহেলা ও পশ্চাৎপদতার শিকার। কিন্তু যদি কোনো গ্রাম পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও মানবিক মূল্যবোধে পরিপূর্ণ হয়, তবে সেই গ্রাম একটি আদর্শ গ্রামের মর্যাদা পায়।
একটি আদর্শ গ্রাম হতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন মৌলিক চাহিদার পূর্ণতা। এর মধ্যে রয়েছেÑপর্যাপ্ত খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। আদর্শ গ্রামে প্রতিটি মানুষ এই সকল সুবিধা পায় এবং সম্মানের সঙ্গে বসবাস করে। এই ধরনের গ্রামে রাস্তা-ঘাট পাকা থাকে, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত থাকে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে এবং গভীর নলকূপ বা পানির ট্যাংক দিয়ে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিটি বাড়ির চারপাশে থাকে সবুজ গাছগাছালি, ফুলের বাগান এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। একটি আদর্শ গ্রামে শিক্ষার হার শতভাগ হয়। শিশুদের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিশোরদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কখনো কখনো কলেজ বা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটও থাকে। সেখানে বিনা মূল্যে শিক্ষা, স্কুল ফিডিং, পাঠ্যবই ও শিক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করা হয়। শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সচেতনতা গ্রামের শিক্ষার মানকে উন্নত করে তোলে।
আদর্শ গ্রামে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে যেখানে নিয়মিত চিকিৎসক এসে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। সেখানে গর্ভবতী নারীদের জন্য টিকাদান, শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা থাকে। জনসচেতনতার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত ক্যাম্পেইন করেন এবং সবাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। যেহেতু অধিকাংশ গ্রামের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল, তাই একটি আদর্শ গ্রামে কৃষিকাজ আধুনিক ও ফলনক্ষম হয়ে ওঠে। কৃষকেরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে, সরকারিভাবে প্রাপ্ত সার, বীজ ও কীটনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করে। পাশাপাশি গ্রামের নারীরা হাঁস-মুরগি পালন, সেলাই, হস্তশিল্প, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে পরিবারের আয় বাড়ায়। আদর্শ গ্রামে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে। উৎসব যেমন ঈদ, পূজা, বাংলা নববর্ষ, বইমেলা ইত্যাদি আনন্দ-উৎসবে পরিণত হয়। গ্রামের তরুণরা নাট্যচর্চা, খেলাধুলা, পাঠাগার ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মানবিক, সৃজনশীল ও নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হয়।
আদর্শ গ্রাম পরিবেশ সচেতন হয়। সেখানে বৃক্ষরোপণ করা হয়, প্লাস্টিক বর্জন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা থাকে। কৃষিক্ষেত্রে জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হয় এবং গ্রামের মানুষ টেকসই জীবনধারার দিকে ধাবিত হয়। সোলার প্যানেল, বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের মতো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আজকের যুগে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে আদর্শ গ্রামে ইন্টারনেট সুবিধা, ডিজিটাল কমিউনিটি সেন্টার, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন শিক্ষা ও কৃষি তথ্যসেবা চালু থাকে। এতে গ্রামের মানুষ বিশ্বমানের তথ্য ও সুযোগের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।
একটি আদর্শ গ্রাম শুধু একটি জায়গা নয়, এটি একটি জীবনদর্শনÑযেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়, মূল্যবোধ লালিত হয়, এবং টেকসই উন্নয়নের পথে হাঁটা হয়। বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আমাদের প্রতিটি গ্রামকে আদর্শ গ্রামে রূপান্তর করতে হবে। আর এই কাজে সরকারের পাশাপাশি আমাদের প্রত্যেককেও সচেষ্ট হতে হবে। কারণ একটি আদর্শ গ্রামের ভিতরেই লুকিয়ে আছে একটি উন্নত জাতির ভবিষ্যৎ।
একটি আদর্শ গ্রাম কেবল একটি উন্নত গ্রাম নয়, এটি এক সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও মানবিক সমাজের প্রতিচ্ছবি। আমরা আমাদের নিজ নিজ গ্রামকে আদর্শ গ্রামে পরিণত করতে সচেষ্ট হই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট