এম,এ,মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার (নওগাঁ), দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
বর্তমান বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা ও পরিকল্পিত উদ্যোগ। সেই লক্ষ্যেই পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়নমূলক সংস্থা ESDO (Environmental and Social Development Organization) শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম গ্রহণ করে। এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য ছিল এলাকার রাস্তা-ঘাট, পানি নিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিদ্যমান সমস্যাসমূহ নির্ধারণ করে সেগুলো ইউনিয়ন পরিষদের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রথমেই ESDO-এর উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি “কমিউনিটি ম্যাপিং” কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই ম্যাপিং প্রক্রিয়ায় স্থানীয় জনগণ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে নিজ এলাকাকে চিহ্নিত করে কোথায় কোথায় রাস্তার অবস্থা খারাপ, কোথায় পানি জমে থাকে, এবং কোথায় বর্জ্য ফেলার উপযুক্ত জায়গা নেই। এই অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে উঠে আসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যা সাধারণত সরকারি তথ্যভাণ্ডারে থাকে না। এতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, স্থানীয় সমস্যা সম্পর্কে স্থানীয়রাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
ম্যাপিং কার্যক্রমের পরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বার, ESDO-এর প্রতিনিধি, স্থানীয় যুব সমাজ, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং সাধারণ জনগণ। বৈঠকে আলোচিত হয়, কীভাবে চিহ্নিত সমস্যাগুলো ইউনিয়ন পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় রাস্তা সংস্কার, পানি নিষ্কাশন নালার উন্নয়ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণে।বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেমন—প্রধান রাস্তাগুলোর জরুরি সংস্কার, নির্দিষ্ট স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন, সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান পরিচালনা এবং স্থানীয় যুবকদের নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন। ESDO ও ইউনিয়ন পরিষদ যৌথভাবে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে এবং সেই অনুযায়ী বাজেটে প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করবে।এই উদ্যোগ শুধু সমস্যার সমাধানই নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে—যেখানে স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা থাকলে যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পই টেকসই হয়। ESDO-এর এই কার্যক্রম স্থানীয় উন্নয়নের এক নতুন পথ খুলে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নসহ দেশের অন্যান্য এলাকারও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।