স্টাফ রিপোর্টার আদিলুর রহমান গফরগাঁও ময়মনসিংহ
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১০ প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার বেশ জোরেসোরে চলছে। এখানে বিএনপির দলীয় একাধিক প্রার্থী শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে মাঠে নামছে।। ময়মনসিংহ ১৫৫ গফরগাও ১০ আসনে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মরহুম ফজলুর রহমান সুলতান বিজয়ী হন। এরপর ১৯৯১,১৯৯৬,২০০২,২০০৮ এবং ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আওয়ামীলীগের সঙ্গে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। ময়মনসিংহ ১০-গফরগাঁও, ময়মনঃ৭- ত্রিশাল, ময়মনঃ১১- ভালুকা ও ময়মনঃ১- হালুয়াঘাট নির্বাচনী এলাকা আঃলীগ অধ্যুষিত। গফরগাঁও আসনে বিএনপি থেকে এবার প্রার্থী হয়েছে এবং হবেন এবি সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক আবুল কাশেম, স্বপন চৌধুরী, এ্যাডঃ মীর আখলাকুর রহমান নান্নু, মুশফিকুর রহমান, আলমগীর মাহমুদ আলম, ডাঃ মোফাখখারুল ইসলাম রানা, আখতারুজ্জামান বাচ্চু, এ্যাডঃ আল ফাত্তাহ মোঃ আব্দুল হান্নান খান।
★ এবি সিদ্দিক ২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হতে পারে নি। বিএনপিতে তাঁর অবদান অপরিসীম। দলের জন্য তাঁর প্রচুর আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।ফেসিস্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে গফরগাঁও এর মাটিতে দূর্গ ঘরে তুলেছিলেন, তার নেতৃত্বে ২০০৯- ২০১৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামিলীগ কোনঠাসা হয়েছিল
।তিনি আন্দোলন করতে যেয়ে অসংখ্য মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনে শরীরের রক্ত ঝরিয়েছিলেন।২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন বর্জনের পোগ্রাম ও মিছিল এবং লিফলেট বিতরন কালে বিজিপির হাতে ধরা খেয়েও পার পেয়েছিলেন। আওয়ামিলীগ এবং পুলিশ মিলে অন্তত ১০ বার উনার বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করে। তিনি এখন ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। জোটগত কারণে এ আসনটি এল.ডি.পি’কে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।
★ অধ্যাপক আবুল কশেম ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। তিনি ১৯৮৮ সাল থেকে ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির পরপর ২বার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ম্যাডাম জিয়া তাঁকে যথেষ্ট মূল্যায়ণ করেন। ম্যাডাম জিয়া জেলখানা যাবার আগে অধ্যাপক কাশেমকে সভাপতি করে জেলা বিএনপির কমিটি গঠনে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে সেটি কার্জকরী হয়নি।
★ স্বপন চৌধুরী জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ময়মনসিংহ জেলার প্রতিষ্ঠা সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্বাচিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্বৈরাচার এরশাদ বিরুধী আন্দোলনে কিংবদন্তি ছাত্রনেতা ছিলেন।আমরা তাঁর সহযোদ্ধা ছিলাম। তাঁর উদ্যোগে ও আয়োজনে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে ময়মনসিংহে ছাত্রদল আয়োজিত তিনটি ছাত্র জনসভা ও চারটি ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া ১৯৭৯ সালে ১১ মার্চ ম.প.ই’তে তাঁর উদ্যোগে ও আয়োজনে অনুষ্ঠিত স্মরণকালের বৃহত্তর ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ম্যাডাম খালেদা জিয়া স্বপন চৌধুরীকে সেরা সংগঠক হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তাছাড়া বিএনপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহে বিএনপির অপ্রত্যাশিত বিজয় অর্জিত হয়েছে। তিনি ১৯৮৮ সালে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১০ সালে যুগ্ম আহ্বায়ক সহ ৩৬ বছর যাবৎ একটানা জেলা বিএনপির কমিটিতে ছিলেন। ১৯৭৮ সালে গফরগাঁও বিএনপির প্রতিষ্ঠা যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি গফরগাঁও উপজেলা ও পাগলা থানা বিএনপির সবেক সিনিয়র সদস্য। তিনি ময়মনসিংহের প্রথম ব্যক্তি ম্যাডাম জিয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।
★ এডভোকেট মীর আখলাখুর রহমান নান্নু একজন প্রবীণ রাজনীতিবীদ ১৯৭৮ সালে গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠা যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৮৮ সালে গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর পিতা খ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবী ও রাজনীতিবীদ মরহুম মীর সিরাজুল হক।
★ মুশফিকুর রহমান গফরগাঁও এর জনপ্রিয় নেতা মরহুম ফজলুর রহমান সুলতান সাহেবের সুযোগ্য পুত্র। পিতার জনসমর্থন তাঁকে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে। জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সদস্য। উপজেলার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।
★ আলমগীর মাহমুদ আলম ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা৷ ঢাবি শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ৯০’এর গণঅভ্যুত্থানের পর দীর্ঘ সময় রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় ছিলেন। পরে জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হয়ে পুনরায় রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এর দায়িত্ব পালন করছে। তিনি জেলা মটোর মালিক সমিতির সভাপতি। গফরগাঁও রাজনীতিতে নবাগত হলেও বেশ পরিচিত।
★ ডা. মোফাখখারুল ইসলাম রানা ময়মনসিংহের রাজনীতিতে একজন উচ্চশিক্ষিত রাজনীতিবীদ। রানা ম.চি.ম ছাত্রদলের সভাপতি ও জেলা সহ-সভাপতি ছিলেন। ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পাগলা থানার আহ্বায়ক ছিলেন। এখন জেলা বিএনপির সদস্য। বিএনপিতে তার অবদান অপরিসীম।
★ আখতারুজ্জামান বাচ্চু ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন অভিজ্ঞ ও রাজনৈতিক দূরদর্শী সম্পন্ন নেতা। সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক অতঃপর দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। সে ১৯১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলো। কিন্তু জোটগত কারণে এ আসনে এল.ডি.পির প্রার্থী নির্বাচন করে।
★ এ্যাডঃ আল ফাত্তাহ বিএনপির একজম ত্যাগী নেতা। আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তামানে সদস্য। পাগলা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে তাদের পাশে থেকেছেন। তাদের আর্থিক সহ নানান সহযোগিতা করেছে।
ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনে বিএনপি ছয় ভাগে বিভক্ত। এরা একে অপরের শক্ত প্রতিপক্ষ। এ অবস্থায় দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি বিএনপির নীতি নির্ধারকরা যথেষ্ট বিচার বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিবেন এমনটা জানা যায়।