নওগাঁর সাপাহারে ১৫০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা।
সাজেদুর রহমান, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
নওগাঁর সাপাহারে এবার প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় সাপাহার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বর্তমানে সাপাহার উপজেলা আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে এবং দেশের সবচেয়ে বড় আম বাজার এখন এই উপজেলায় অবস্থিত। পুরোদমে সাপাহার উপজেলার বাগানগুলোতে আম ভাঙ্গা শুরু হয়েছে । প্রতিদিন সকাল শুরু হতেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা এবং পাশ্ববর্তী উপজেলার থেকে শত শত ভ্যান ভটভটি গাড়ী করে বাজারে আসতে শুরু করে। ঈদের পর ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন বেপারী এসে আম কনা শুরু করেছে। সাপাহার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সাপাহার উপজেলায় ৯ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে ১ লক্ষ ৪০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য হতে পারে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। এ বছর আম রুপালি, ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, কাটিমন, গৌড়মতি, বারি-৪ সহ দেশি-বিদেশি প্রায় ১৫-১৬ জাতের আম চাষ হয়েছে। তবে মৌসুমের শুরু থেকেই তীব্র খরা এবং অনাবৃষ্টির কারণে উত্তরের বরেন্দ্র অঞ্চলটি কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। সাপাহারের বরেন্দ্র অঞ্চলে উৎপাদিত সুস্বাদু ও উন্নত জাতের আমের কদর দেশজুড়ে যেমন রয়েছে, তেমনি বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যেই সাপাহার উপজেলা ‘আমের রাজধানী’ হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে এই উপজেলা থেকে প্রতি বছর ১৫০০ কোটির অধিক টাকার আম বাণিজ্য হয়।
সরেজমিনে বিভিন্ন আমবাগান ঘুরে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে নানা জাতের আম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতগুলো হলো গুটি, আশ্বিনা, গোপালভোগ, হিমসাগর, আম রুপালি, হাড়িভাঙ্গা, খিরসাপাত, কাটিমনসহ অন্যান্য জাত। তবে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি চাষ হচ্ছে আম রুপালি জাতের। এই জাতের আম সুমিষ্ট এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় প্রায় ৭৫ শতাংশ বাগানে এই জাতের আমই চাষ করা হয়েছে।
সাপাহার উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি ও সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান সেলিম জানান, দেশের মধ্যে এবার নওগাঁয় সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার আমের মৌসুমে ঝড় ঝাপটা কম হয়েছে এবং রোগবালাইও তুলনামূলকভাবে কম। আশা করা হচ্ছে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তারা আরও জানান, কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরিচর্যার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে এবং কৃষি বিভাগের ফিল্ড অফিসাররা নিয়মিত মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চলেছেন।