বাঞ্ছারামপুরে আত্মহননের করুণ পরিসংখ্যান
রিপন সরকার বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় আত্ম হননের ঘটনা।
অভিমান, প্রেম, পড়াশোনার চাপ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও মানসিক অস্থিতায় গত দুই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ভুগে গেল ১৭ জন। আত্মহননের পথে হেঁটেছেন তারা। এর মধ্যে ৪৬.১ শতাংশই মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী। ছাত্রীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি, এ হার ৬১ শতাংশ। বিশ্লেষকরা মনে করেন, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ ও তুলনামূলক দুর্বল মানসিক স্থিতিশীলতার কারণে মেয়ে শিক্ষার্থীরা সহজে হতাশায় ডুবে এ পথে পা বাড়াচ্ছে।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন সফলতা উদ্যাপন করা হলেও ব্যর্থতাকে সামাল দেওয়ার বিষয়টি সমাজে শেখানো হয় না। তিনি সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নজর দিতে অভিভাবকদের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, “একটা পরিবার একটা বটগাছের মতো। সেই গাছের একটি ডাল ভেঙে গেলে যেমন পুরো গাছে তার প্রভাব পড়ে, তেমনি পরিবারের একজন হারিয়ে গেলে পুরো পরিবারই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এটা শুধু ব্যক্তিগত নয়, সামগ্রিক এক শোক ও চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
একটি জীবন হারিয়ে গেলে, শুধুই এক ব্যক্তি নয়—ভেঙে পড়ে একটি পরিবার, কেঁপে ওঠে একটি সমাজ।
“আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, তিনিই একমাত্র নেওয়ার অধিকার রাখেন। মানুষ নিজে নিজেকে নেওয়ার অধিকার পায় না। তাই জীবনকে ভালোবাসতে হবে, কষ্টের সময় ধৈর্য ধরতে হবে—কারণ প্রতিটি জীবনই অমূল্য।” হতাশা ও বিষণ্নতার অশুভ চক্র থেকে বের হতে না পেরে তারা বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। আত্মহত্যা হলো ইচ্ছা করে নিজের জীবন শেষ করার একটি চূড়ান্ত পদক্ষেপ। মানুষের মানসিক যন্ত্রণা, হতাশা এবং অসহায়ত্বের এক মারাত্মক বহিঃপ্রকাশ এটি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ধারণা কম। বিষয়টি নিয়ে তারা সচেতনও নয়। মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আহ্বান জানান ।