জমজ, অথচ একসাথে নিথর—নাটোরে জোড়া লাগানো শিশু জন্ম নিয়ে কান্নার রোল
বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রতিনিধ মো: আজাদুল ইসলাম
তারা পরস্পর বোন। দেখে মনে হচ্ছিল, যেন মায়ের গর্ভেই চিরকাল একে অপরকে ভালোবেসে জড়িয়ে রেখেছিল। জন্মের সময়ও সেই ভালোবাসার ছাপ ছিল স্পষ্ট—মাথা থেকে বুক আর পেট পর্যন্ত জোড়া, চার হাত যেন পরস্পরকে আঁকড়ে ধরা, আর আলাদা চারটি পা।
শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া আমেনা হাসপাতালে তাদের জন্ম হয়। কিন্তু এই পৃথিবীর আলো দেখা হয়নি তাদের। নিঃশ্বাস ফেলার আগেই থেমে গেছে তাদের পথচলা।
জানা গেছে, পাশ্ববর্তী বাগাতিপাড়া উপজেলার চন্দ্রখৈল গ্রামের সুমন আলীর স্ত্রী ২৪ বছর বয়সী জরুফা খাতুন বৃহস্পতিবার বিকেলে আমেনা হাসপাতালে ভর্তি হন। আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে তার গর্ভে জমজ শিশু রয়েছে। শুক্রবার প্রসববেদনা উঠলে স্বাভাবিক প্রসবেই জন্ম হয় এই ব্যতিক্রমী জমজ শিশুর।
জরুফা খাতুন বলেন, “সাত মাস ২৮ দিনের মাথায় আমার সন্তানদের জন্ম হলো। আমার মনে হয় প্রসবের আগেই ওরা গর্ভেই মারা গেছে। ওরা আমাদের দ্বিতীয় সন্তান। প্রথম সন্তান একটি মেয়ে, বয়স এখন ৭ বছর।”
অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে আমেনা হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আনছারুল হক জানান, “আমরা বিভিন্ন মিডিয়ায় এমন জোড়া লাগানো শিশুর জন্ম দেখে থাকি। জীবিত জন্ম নিলে অনেক সময় অস্ত্রোপচারে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়। তবে সবসময় তা সফল হয় না। এই দুই কন্যা শিশু ইমম্যাচিউরড (অপরিপক্ক) ছিল এবং মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে।”
হাসপাতালের ঘরটিতে তখন নীরবতা। শোকাচ্ছন্ন পরিবার, নিঃসাড় দুটি শিশু—যাদের পৃথিবীতে আগমনের গল্পটাই যেন ভালোবাসা আর বেদনার অপূর্ব এক মেলবন্ধন।